বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ফের আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠছে করোনা চিনে। আবারও দ্রুত বাড়ছে চিনে করোনা সংক্রমণ এবং মৃত্যু সংখ্যা। একদিকে, হাসপাতালগুলিতে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে যেমন চাপ বাড়ছে, তেমনই মরদেহ সৎকারে কার্যত হিমশিম খাচ্ছে চিনের অধিকাংশ শ্মশানগুলি। জানা গিয়েছে, চিনের বেইজিং, চংকিং ও গুয়াংঝৌ শহরের শ্মশানগুলিতে মঙ্গলবার সারি সারি মরদেহ দেখা গিয়েছে। সেখানকার শ্মশানগুলির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অন্য সময়ের চেয়ে তারা এখন অনেক ব্যস্ত। এমনকি এক শ্মশানের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন যে, তাঁদের মরদেহ রাখার জায়গাও ক্রমশ শেষ হয়ে আসছে।
যদিও সেইসব মরদেহগুলি আদৌ করোনা আক্রান্ত রোগীদের কিনা, তা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। কারণ করোনার জেরেই ,মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে কিনা, সে প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন শ্মশানে কাজ করা ব্যক্তিরা। এদিকে, চিন সরকার জানিয়েছে, নতুন করে সেদেশে করোনায় মাত্র ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে, সরকারি মতে, আসম্বার মারা গিয়েছিলেন ২ জন। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে চিনের উহান শহরে প্রথম করোনা শনাক্তের পর এখন পর্যন্ত চিনে মোট ৫ হাজার ২৪২ জনের মৃত্যুর হয়েছে বলেই তথ্য দিয়েছে চিনের সরকার। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশ হওয়া সত্ত্বেও চিনে করোনায় এই পরিমাণ মৃত্যু অন্যান্য দেশের তুলনায় যথেষ্টই কম।
এদিকে, চিনে চলতি মাসেই তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়ে শহরগুলি থেকে করোনার কঠোর বিধিনিষেধ তুলে নেয় সেদেশের সরকার। কিন্তু বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর থেকেই হাসপাতালগুলিতে রোগীর সংখ্যা বাড়তে দেখা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, চাহিদা মেটাতে পারছে না ওষুধের দোকানগুলি। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছেন, আগামী কয়েক মাসে চিনের মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হতে পারে। এর জেরে করোনায় মৃত্যু হতে পারে ২০ লাখেরও বেশি মানুষের।
সম্প্রতি বেজিংয়ে করোনায় মৃতদের সৎকারের জন্য ব্যবহৃত একটি শ্মশানের বাইরে অনেক গাড়ির সারি দেখা গিয়েছে। মরদেহবাহী এসব গাড়ির অনেকগুলিকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করতে হয়েছে বলেও খবর। এদিকে, জানা গিয়েছে যে, মরদেহ রাখার জন্য তাঁদের শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ঘরে জায়গা ক্রমশ শেষ হয়ে আসছে। তবে এতো মৃত্যুর নেপথ্যে মারণ করোনা কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
তবে চিনের বিভিন্ন শহরের বিভিন্ন শ্মশানের কর্মীরা এ নিয়ে যা জানিয়েছেন, তার মর্মার্থ হল, এখন দিনে ৩০টির বেশি মরদেহ সৎকার করতে হচ্ছে তাঁদের। সংলগ্ন এলাকা থেকেও সৎকারের জন্য মরদেহ আসছে। শহরের আরেকটি শ্মশানের কর্মী জানিয়েছেন,গত বছরগুলির তুলনায় মরদেহ সৎকারের ক্ষেত্রে তাঁরা তিন থেকে চার গুণ বেশি ব্যস্ত থাকছেন এখন। দিনে এখন ৪০টির বেশি মরদেহ সৎকার করতে হচ্ছে তাঁদের।