বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ অধিকাংশ দম্পতিই মনে করেন তাদের জীবনে সন্তানের মুখ দেখা ভগবান প্রদত্ত এক অন্যতম মূল্যবান উপহার। তবে সকলের কপালে সেই সন্তান সুখ নাও লেখা থাকতে পারে। বিবাহিত জীবনে বছরের পর বছর অতিক্রান্ত হলেও অনেকেই সন্তানের মুখ দেখতে পারেননা। এমনকি এক্ষেত্রে অনেক সময় বিজ্ঞান ও চিকিৎসকের যাবতীয় প্রচেষ্টাও বিফলে যায়।
এমনই বাংলাদেশের এক দম্পতি দীর্ঘ ১০ বছরের বিবাহিত জীবন অতিক্রান্ত করার পরেও সন্তানের মুখ দেখতে পারেননি। এমনকি সন্তান লাভের জন্য সমস্ত রকমের চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎই একদিন তাঁদের ভাগ্যের চাকা ঘুরল। একইসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম দিলেন বাংলাদেশের ওই মহিলা।
জানা গিয়েছে, বাংলাদেশি ওই মহিলার নাম লাকি বেগম। বুধবার সকাল ১১ টা নাগাদ কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চারটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, সদ্যজাত চার শিশুর মধ্যে দুটি ছেলে এবং দুটি মেয়ে।
জানা গিয়েছে, ১০ বছর আগে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার বাসিন্দা ফাইজুর রহমানের সঙ্গে লাকি বেগমের বিয়ে হয়। ২৮ বছরের লাকি বেগম ও তাঁর স্বামী ফাইজুরের সঙ্গে বড় ছয়সূতি গ্রামেই থাকতেন। ফাইজুর স্থানীয় বাজারের একটি দর্জির দোকানে টেলারিংয়ের কাজ করেন। যেটুকু উপায় হয় সেই দিয়েই সংসার চালাতে হয় তাঁদের।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বিবাহিত জীবনের ১০ বছরের মাথায় সন্তানসম্ভবা হন লাকি বেগম। এরপর থেকেই তিনি জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগের প্রধান ডা. ইসরাত জাহানের তত্ত্বাবধানে থেকেই চিকিৎসা করাচ্ছিলেন। বুধবার ডা. ইসরাত জাহানই লাকি বেগমের অস্ত্রোপচার করেন। লাকি বেগম জন্ম দেন ৪ সন্তানের।
অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসক জানিয়েছেন, সদ্যোজাত ৪ শিশুই সম্পূর্ণরূপে সুস্থ রয়েছে। তবে লাকির উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দিয়েছে। হঠাৎ করেই রক্তচাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় তাঁকে আইসিইউতে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মামা হওয়ার আনন্দে লাকি বেগমের ভাই হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, “আমার বোন বহুদিন ধরেই সন্তানলাভের জন্য অপেক্ষা করছিল। সন্তান না হওয়ায় মনমরা হয়ে গিয়েছিল সে। তবে আল্লাহর আশীর্বাদে এবার থেকে তাঁকে ৪ জন মা বলে ডাকবে। বোনের জন্য আমি খুব খুশি।”
এর পাশাপাশি লাকি বেগমের বড় ভাই হাবিবুল্লাহ জানিয়েছেন, ১০ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর একইসঙ্গে ৪ সন্তানের জন্ম দেওয়া একদিকে যেমন আনন্দের তেমনি চিন্তার বিষয়ও বটে। সদ্যজাতদের বাবা অত্যন্ত দরিদ্র। দর্জির দোকানে কাজ করেই কোনওরকমে সংসার চালান তিনি। তাই চার সন্তানকে কিভাবে তিনি লালন-পালন করবেন সেই নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ থেকেই যায়।