বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ আজ রাজ্যের ৫ রাজ্যের ফল ঘোষণা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, গোয়া এবং মণিপুর এই ৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল বলছে, পঞ্জাব বাদে ৪ রাজ্যেই গেরুয়া ঝড়ে বিরোধীরা ধুয়ে-মুছে সাফ। পঞ্জাবে সরকার গঠন করতে চলেছে আম আদমি পার্টি। এদিকে, ২০২২-এ পাঁচ রাজ্যের ফলাফল ঘোষণার দিনই ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে কী ঘটতে চলেছে, তাঁরই ইঙ্গিত দিলেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি পরিবারবাদ, দুর্নীতি, জাতপাতের রাজনীতির অভিযোগ তুলে বিরোধীদের আক্রমণ করতেও ছাড়লেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
দেশের সবথেকে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়েছে বিজেপি। আবারও একবার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে উত্তরপ্রদেশে সিংহাসনে বসতে চলেছেন মোদীঘনিষ্ঠ যোগী আদিত্যনাথ। কথায় আছে, উত্তরপ্রদেশ যার, দিল্লি তার। দেশের সবথেকে বড় রাজ্য উত্তর প্রদেশের মানুষ ফের একবার যোগী-মোদী এবং বিজেপির উপরেই ভরসা করল। উত্তরপ্রদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও মুখ্যমন্ত্রী পরপর দু’বার ক্ষমতার আসনে বসতে চলেছেন। আড়াইশোর বেশি আসনে উত্তরপ্রদেশে জিতেছে বিজেপি। এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উত্তরপ্রদেশে বিজেপিকে ফের ক্ষমতায় আনার মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
চার রাজ্যে জয়ের পর, এদিন সন্ধ্যায় দিল্লিতে বিজেপির সদর দপ্তরে বক্তব্য রাখেন নরেন্দ্র মোদী। শুরুতেই উত্তরপ্রদেশ-সহ চার রাজ্যের ভোটারদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি। বলেন, ‘আজ গণতন্ত্রের উৎসবের দিন। আজ থেকেই শুরু হোক আগাম হোলি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি জয়লাভ করার পর কিছু রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেছিলেন, ‘এই জয়ে এমন কী রয়েছে? ২০১৭-তেই তো এই ফল ঠিক হয়ে গিয়েছিল।’ আমি আশা করি তাঁরা এবারও একই কথা বলবেন। ২০২২-এই ২০২৪-এর ফলাফল ঠিক হয়ে গিয়েছে।”
এর পাশাপাশি পরিবারবাদ নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণ করতেও ছাড়েননি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি পরিবারবাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সরব হয়েছি। আমি কোনও পরিবারের বিরুদ্ধে নই। আমি গণতন্ত্র নিয়ে চিন্তিত। পরিবারবাদ কীভাবে মানুষের ক্ষতি করছে সেটাই আমি বোঝাতে চেয়েছি। আমি আশাবাদী, একদিন এমন আসবে যেদিন ভারত থেকে পরিবারবাদী রাজনীতির সূ্র্যাস্ত হবে। এই নির্বাচনেই ভোটাররা সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন কী ঘটতে চলেছে।’
উল্লেখ্য, কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে একাধিকবার গরিব, শ্রমিক এবং কৃষকবিরোধী তকমা দিয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দল। সেই সঙ্গে কয়েক দশক ধরে বিজেপির বিরুদ্ধে জাতপাতের রাজনীতি করারও অভিযোগ আছে। এদিন বিরোধীদের সেই সবের জবাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে গরিবের দরদি সরকার বলেই উল্লেখ করেছন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সাফ কথা, যেখানে যেখানে মহিলারা বেশি ভোট দিয়েছেন, সেখানে বিজেপি দুর্দান্ত ফল করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশকে জাতপাতে ভাগ করতে চেয়েছে বিরোধীরা। উত্তরপ্রদেশকে জাতপাতে বিভক্ত করে সেখানকার মানুষদের অপমান করেছে বিরোধীরা। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের লোকেরা বিকাশবাদকে বেছে নিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশের মানুষ ওদের শিক্ষা দিয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন যে, “কিছু মানুষ ক্রমাগত রাজনীতির স্তর নীচে নামাচ্ছে। করোনার সময়ও তাঁরা দেশবাসীকে বোকা বানাতে চেয়েছে। ভারতের টিকা নিয়েও তাঁরা সন্দেহ প্রকাশ করেছে। ইউক্রেনে যখন পড়ুয়ারা আটকে, তখনও দেশের মনোবল ভাঙার কাজ হয়েছে। এরা পরিবারের চিন্তা বাড়িয়েছে। এরা ‘অপারেশন গঙ্গা’কেও প্রাদেশিকতার বন্ধনে বাঁধাতে চেয়েছে।”
এদিন উত্তরপ্রদেশের পাশাপাশি গোয়া, উত্তরাখণ্ড, মণিপুরের মানুষকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি পঞ্জাবে বিজেপির প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘আগামী পাঁচ বছর সীমান্তবর্তী রাজ্য পঞ্জাবকে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাত থেকে রক্ষা করবেন বিজেপি কর্মীরা।’