বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ শৈত্যপ্রবাহে থর থর করে কাঁপছে গোটা উত্তর ভারত। বহু পার্বত্য অঞ্চলেই বর্তমানে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে নেমে গিয়েছে। আর সমুদ্র থেকে ১৪,০০০ কিলোমিটার উঁচুতে অবস্থিত কেদারনাথ ধামে তো স্বাভাবিকভাবেই তাপমাত্রা হিমাঙ্কের অনেকটাই নীচে নেমেছে। সেখানে এখন রাতভর তুষারপাত হচ্ছে। আবার তার সঙ্গে রয়েছে হাড় পর্যন্ত কাঁপিয়ে দেওয়ার মতো ঝোড়ো হাওয়া। এই রুক্ষ এবং প্রতিকূল পরিবেশেও নিজেদের লক্ষ্যে অবিচল রয়েছেন দুই সাধু।
মাইনাস ১০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ভোর ৩ টের সময় খালি গায়ে ধ্যান করছেন তাঁরা। সম্প্রতি এরকমই এক অবিশ্বাস্য ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। গোটা উত্তর ভারত যখন শীতের মোকাবিলায় রীতিমতো নাজেহাল, একের পর এক শীত পোশাক গায়ে চাপাতে হচ্ছে, তখন এই দুই সাধুর তুষারঝড়ের মধ্যে খালি গায়ে বসে ধ্যান করা, স্বাভাবিকভাবেই তুফান তুলেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
উল্লেখ্য, ভারতীয় সনাতন ধর্মে সবসময় মন বা মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণের উপর বেশি করে জোড় দেওয়া হয়েছে। মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে জীবনে চলার পথে অনেক অসম্ভবকেই সম্ভব করা যায়। এমনকি মনকে নিয়ন্ত্রণে এনে খিদে বোধ, গরম-ঠাণ্ডা লাগা, ব্যথা-বেদনা সবই ভুলে থাকা বা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। যাবতীয় জাগতিক বাধা অতিক্রম করা সম্ভব বলেও শোনা যায়। ভারতীয় সাধুরা সেই ঐতিহাসিক সময় থেকে ধ্যানের মাধ্যমে নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করার কৌশলই অনুশীলন করে আসছেন। এই মনের উপর দখল নিয়েই তাঁরা খিদে, গরম-ঠাণ্ডা বোধকে তুচ্ছ করে ফেলেন। এও শোনা যায়।
যেমন, এর আগেও বহুবার বা বলা ভালো প্রতিবারই গঙ্গাসাগর মেলায় প্রবল শীতের মধ্যেও নাগা সন্ন্যাসীদের কোনও আচ্ছাদন ছাড়াই ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। মকর সংক্রান্তির দিন সঙ্গমে ডুবও দেন তাঁরা। তবে, কেদারনাথ ধামের এই দুই সাধুর ধ্যানের দৃশ্য যেন অতিলৌকিক।
ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে যে, উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথ ধামে প্রবল তুষারপাতের মধ্যেই ভোর ৩ টের সময় হিমাঙ্কের নীচে থাকা তাপমাত্রায় খালি গায়ে ধ্যানে বসেছেন দুই সাধু। তাঁরা ভক্তি এবং বিশ্বাসের সঙ্গে ভগবান শিবের আরাধনা করছেন। তাঁদের পরনে পোশাক বলতে শুধুই নিম্নাঙ্গে গেরুয়া ধুতি। দেহের উপরের অংশ অনাবৃত। ঠিক পিছনেই দেখা যাচ্ছে কেদারনাথ মন্দির। তুষারপাতে চারপাশ সাদা হয়ে যাচ্ছে। ওই দুই সাধুর গায়ের বরফ পড়ছে। কিন্তু তাতে তাঁদের বিন্দুমাত্র হুঁশ নেই। আপমাত্রা যে মাইনাস ১০ ডিগ্রি তা তাঁদের দেখে বোঝার উপায় নেই। এক নেটিজেন তো বলেইছেন যে, ‘এটা সাধনা এবং ভগবান শিবের শক্তি। প্রত্যেক তপস্বীই হলেন ভগবান শিবের রূপ।’