বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ খুব বেশিদিন আগের কথা নয়, এখনও মানুষের স্মৃতিতে টাটকা রাজস্থানের দলিত ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা। উঁচু জাতের জলের পাত্র ছোঁয়ার ‘অপরাধে’ শিক্ষকের মারে মৃত্যু হয়েছিল এক দলির ছাত্রের। এবার রাজস্থানের সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল যোগীরাজ্যে।
উত্তরপ্রদেশের আওরাইয়ায় এক স্কুলের ক্লাস টেস্টে মাত্র একটি বানান ভুলের জন্য দশম শ্রেণির দলিত ছাত্রকে নির্মমভাবে মারলেন উচ্চবর্ণের এক শিক্ষক। ১৯ দিনের লড়াই করেও প্রাণে বাঁচল না ১৫ বছরের ওই দলিত পড়ুয়া। শনিবার রাতে রাতে এটাওয়ার স্পেশ্যালাইজড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় ওই দলিত ছাত্রের।
মৃত ছাত্রের নাম নিকিত দোহরে, বয়স ১৫ বছর। ইতিমধ্যেই ওই ছাত্রের বাবা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন। মৃত ছাত্র নিকিতের বাবার দাবি, স্কুলের সোশ্যাল সায়েন্স পরীক্ষায় একটা বানান ভুল করার কারণে গত ৭ সেপ্টেম্বর তাঁর ছেলে নিকিতকে বেধড়ক মারধর করেন শিক্ষক অশ্বিনী সিং। জানা গিয়েছে, লাঠি, রড, লাথি-কিছুই বাদ যায়নি। ছাত্রটি অজ্ঞান না হওয়া পর্যন্ত মার থামাননি ওই শিক্ষক।
শিক্ষকের মারে গুরুতর আহত ওই ছাত্রকে হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবার। ছেলেটির পরিবারের শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, স্ট্রেচারে শুয়ে নিকিত। চোখ-মুখ ফোলা, জ্ঞান নেই বললেই চলে। পড়ুয়ার বাবার দাবি, ছেলের চিকিৎসার জন্য প্রথমে ১০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন অভিযুক্ত শিক্ষক। পরে আরও ৩০ হাজার টাকা দেন, কিন্তু তারপর থেকে আর নিকিতের বাবার ফোন ধরাই বন্ধ করে দেন। সামনাসামনি দেখা হলে, ওই শিক্ষককে ছেলের দুরবস্থার জন্য দায়ী করেন বাবা। তার জবাবে তাঁর জাত তুলে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকেন অভিযুক্ত শিক্ষক। এদিকে, নিকিতকে একাধিক হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার পরেও, তাঁর অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। বরং শনিবার এটাওয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় নিকিতের।
এরপরই নিকিতের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। অভিযুক্ত শিক্ষক নিখোঁজ, ইতিমধ্যেই তাঁর খোঁজে তিনটি দল গঠন করেছে পুলিশ। আওরাইয়ার পুলিশ প্রধান চারু নিগম জানিয়েছেন, ছাত্রটির ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। আপাতত তপসিলি জাতি-উপজাতি সুরক্ষা আইনের একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।