বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রাজস্থানে মুখ্যমন্ত্রীর আসনে কে বসবেন? তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে, ওই আসনে প্রথম পছন্দ প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী সচিন পাইলট। তবে, এই পদে কে বসবেন, তা নিয়ে ক্রমশ বাড়ছে রাজনীতির পারদ। গান্ধী পরিবারের ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি সিদ্ধান্তে রাজস্থানে এখন বিদ্রোহের আবহ। গান্ধী পরিবারের সিদ্ধান্ত মেনে, কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হলে, তাঁকে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে। সেই জায়গায় গেহলটের উত্তরসূরি হিসেবে উঠে আসছে সচিন পাইলটের নাম। আর সেখানেই আপত্তি অশোক গেহলট অনুগামীদের।
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী পদে সচিন পাইলটকে দেখতে রাজি নয় গেহলটের অনুগামীরা। তাই আজই রাজস্থান বিধানসভার স্পিকার সিপি যোশীর সঙ্গে দেখা করবেন শাসক দলের ৮স২ জন বিধায়ক। সূত্রের খবর, অশোক গেহলট অনুগত এই ৮২ জন বিধায়ক আজ রাতেই তাঁদের পদত্যাগপত্র জমা করতে পারেন। কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। আগামীকালই তাঁর মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার কথা। এদিকে, বিধায়কদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে জানিয়েছিলেন তিনি কংগ্রেসের সভাপতি ও রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী পদ সামলাতে চান একসঙ্গে। তবে, তাতে আপত্তি রয়েছে গান্ধী পরিবারের। সে ব্যাপারে ইতিমধ্যেই স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন রাহুল গান্ধী।
সেক্ষেত্রে গেহলট রবিবার প্রথম একটি পদ বেছে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এদিকে, রবিবার বিধায়ক শান্তি ধরিওয়ালের নেতৃত্বে জরুরি বৈঠক করেন ওই বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়করা। সেখানে সচিনের বিরুদ্ধে একযোগে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলেই খবর। রাজস্থান কংগ্রেস সূত্রে খবর, ২০২০ সালে সচিন খোদ গেহলটের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। বিজেপি-র আগ্রাসনের সামনে দলে টালমাটাল অবস্থা তৈরি করেন তিনি। তাই বিদ্রোহীদের যুক্তি, সঙ্কটের সময় যিনি দলের পাশে থাকেননি, তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মেনে নেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। বরং যাঁরা বিপদে দলের পাশে ছিলেন, তাঁদের মধ্যে থেকেই কাউকে বেছে নেওয়া হোক রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী পদে।
এদিকে, আজকের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এক নির্দল প্রার্থী। সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন যে, ‘বিধায়কদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত না নেওয়া হলে, সরকার চলবে কী করে? সরকার পড়তে বাধ্য।’ এই অবস্থায় রবিবার সন্ধের সময় কংগ্রেসের পরিষদীয় দলের বৈঠক হয়। আজকের বৈঠকে ছিলেন, মল্লিকার্জুন খড়্গে, রাজস্থান প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অজয় মাকেন। এঁদের সঙ্গে আজ বৈঠকে গেহলটের মতবিরোধ হয় বলেও সূত্রের খবর। যার জেরে বৈঠক ছেড়ে বেরিয়েও আসেন অশোক গেহলট।
এদিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে গেহলট জানিয়েছেন, ‘কংগ্রেস সভাপতির উপর দলের নেতাদের আস্থা রয়েছে। আজও তার ঝলক দেখতে পাচ্ছেন আপনারা।’ তবে, সূত্রের খবর, দলের বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের তাতানোর পিছনে গেহলটের ইন্ধন রয়েছে। তাছাড়া গেহলট এবং সচিন পাইলটের দ্বন্দ্ব নতুন নয়। এদিকে, রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সচিন পাইলট। সূত্রের খবর, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর সিংহাসন থেকে সচিনকে দূরে রাখতে, কংগ্রেসের সভাপতি পদ ছাড়তেও দুবার ভাববেন না অশোক গেহলট। তবে, এবার গান্ধী পরিবার এবং কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের সমর্থন রয়েছে সচিনের দিকেই। সেই কারণেই অনুগামীদের খেপিয়ে তুলছেন গেহলট, মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
উল্লেখ্য, রাজস্থান বিধানসভায় মোট আসন সংখ্যা ২০০। এর মধ্যে কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা ১০০। এর পাশাপাশি, মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি থেকেও ৬ জন কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। কয়েক জন নির্দল প্রার্থীও কংগ্রেস সরকারে সমর্থন জানিয়েছেন। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে হলে ১০১টি কমপক্ষে ধরে রাখতে হবে কংগ্রেসকে। এই অবস্থায় বিক্ষুব্ধরা ইস্তফা দিলে আরও একটি রাজ্য কংগ্রেসের হাতছাড়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।