বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ দেশের স্বাধীনতা এবার ৭৫ তম বর্ষে পা রাখতে চলেছে। তাই গোটা বছর ধরেই পালিত হবে ‘আজাদি কা আমৃত মহোৎসব।’ এদিকে তার আগে গত রবিবার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তাঁর বিশেষ আর্জিতে বলেন, ‘আগামী ২ থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সকল নাগরিক নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের ডিপি বদলে ফেলুন। বদলে ব্যবহার করুন তেরঙ্গা পতাকার ছবি।’ ইতিমধ্যেই সেই আবেদন সাড়া দিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। প্রধানমন্ত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়ে বদলে যাচ্ছে একের পর এক সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইল পিকচার থেকে শুরু করে কভার ছবি সবই। আর এবার একে একে বিজেপির নেতারাও তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ছবি বা দলীয় পতাকার পরিবর্তে জাতীয় পতাকার ছবি দিচ্ছেন। সেই তালিকায় এবার যুক্ত হল আরও এক নাম। অবশ্য তিনি গেরুয়া শিবিরের নেতা নন। বরং তিনি বিরোধী দলের হেভিওয়েট নেতা।
প্রধানমন্ত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়ে বুধবার সকালে নিজের টুইটার ডিপি বদলে ফেলতে দেখা গেল কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে। তবে, সেই নতুন ছবিতে তেরঙ্গা পতাকার পাশাপাশি রয়েছে স্বাধীন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর ছবিও। মঙ্গলবারই ‘হর ঘর তেরঙ্গা’ উদযাপনের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নিরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের প্রোফাইল ছবিতেও তেরঙ্গা পতাকা দেখা গিয়েছে। এরপরই এদিন রাহুলের টুইটার ডিপিও বদলে যায়।
প্রধানমন্ত্রীর আর্জি ছিল ২ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সকলেই যেন তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের প্রোফাইল ছবিতে ভারতের পতাকা পোস্ট করে। মোদীর সেই আবেদন কার্যত মেনে নিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। তাঁর পোস্ট করা ছবিতে নেহরুর ছবিটি সাদা-কালো। তবে, তাঁর হাতে ধরা ভারতীয় পতাকাটি রঙিন। সেই সঙ্গে কংগ্রেসের প্রাক্রন সভাপতি লিখেছেন, ‘দেশের গর্ব, আমাদের তেরঙ্গা/ প্রতিটি হিন্দুস্তানির হৃদয়ে, আমাদের তেরঙ্গা।’
প্রধানমন্ত্রী আবেদন মেনে নিয়েও এই পোস্টের মাধ্যমে বিজেপিকে খোঁচা দিয়েছেন রাহুল গান্ধী। এমনটাই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একটা বড় অংশ। কারণ এদিকে তিনি মোদীর আর্জি মেনে নিয়েছেন। ঠিক সেইভাবেই অন্যদিকে, তেরঙ্গা পতাকা দেওয়ার পাশাপাশি নেহরুর ছবি ব্যবহার করে তিনি বিজেপিশাসিত কেন্দ্রের সরকারকে মনে করিয়ে দিতে চাইলেন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর কথাও। উল্লেখ্য, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এই প্রাচীন দলটির অবদানের কথাও তিনি পরোক্ষে মনে করিয়ে দিতে চাইলেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রীর তেরঙ্গা পতাকা ব্যবহারের আবেদনের পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রোফাইল পিকচার থেকে শুরু করে কভার ছবি সবেতেই জাতীয় পতাকা ব্যবহারের হিড়িক পড়ে যায়। গেরুয়া শিবিরের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা সকলেই জাতীয় পতাকার ছবি প্রোফাইল ছবি হিসেবে রাখতে শুরু করেন। তবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় কেন জাতীয় পতাকাকে প্রোফাইল পিকচার রাখার আবেদন করলেন প্রধানমন্ত্রী? নরেন্দ্র মোদী অবশ্য তার কারণও জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘২ আগস্ট দিনটির একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। জাতীয় পতাকার সঙ্গে ২ আগস্টের একটি বিশেষ যোগ রয়েছে। এই দিনেই জন্মেছিলেন পিংলি ভেঙ্কাইয়া। তিনি জাতীয় পতাকার নকশা এঁকেছিলেন। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই এই দিন থেকে সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলের ডিপি হিসেবে ব্যবহার করুন তেরঙ্গার ছবি।’
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর বার্তার পর থেকেই ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামে প্রোফাইল পিকচারে জাতীয় পতাকার ছবি রাখার ধুম পড়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু দেশের বিভিন্ন স্তরের নাগরিকদের সোশ্যাল মিডিয়ায় জাতীয় পতাকা ব্যবহার দেখা যাচ্ছে।