বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী থাকল পাঞ্জাবের জলন্ধর। স্ত্রী, দুই সৎ ছেলে-সহ পরিবারের মোট ৫ জন সদস্যকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারল এক যুবক। পাঞ্জাব পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, পারিবারিক অশান্তির জেরেই এই ঘটনা। এদিকে, ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্ত যুবক। পুলিশ অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে যে, ভয়ঙ্কর একইসঙ্গে অমানবিক এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে পাঞ্জাবের জলন্ধর জেলার বিটলান গ্রামে। অভিযুক্ত যুবকের বয়স ৩০ বছর, নাম কুলদীপ সিং। কুলদীপ পেশায় দিনমজুর। কয়েক বছর আগেই বছর ২৮-এর পরমজিৎ কৌরের সঙ্গে বিয়ে হয় কুলদীপের। উল্লেখ্য, আগেও একবার পরমজিতের বিয়ে হয়েছিল। কুলদীপ তাঁর দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী। প্রথম পক্ষের দুই ছেলেও রয়েছে পরমজিতের।
এদিকে, জানা গিয়েছে, পরমজিতের এই দ্বিতীয় বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই সংসারে অশান্তি শুরু হয়। ধীরে ধীরে অশান্তি চরম আকার নিলে, সন্তানদের নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যান তিনি। কুলদীপের অত্যাচারে ঘর ছাড়তে কার্যত বাধ্য হন তিনি। অভিযোগ তাঁকে এবং দুই সৎ ছেলেকে নিয়মিত মারধর করত কুলদীপ।
যদিও স্ত্রী বাপের বাড়ি চলে যাওয়ার পরে, জোর করেই স্ত্রীকে বাড়ি ফেরানোর চেষ্টা করত অভিযুক্ত কুলদীপ। কিন্তু তাতে পরমজিৎ রাজি না হওয়ায়, প্রতিশোধ নিতেই হত্যার পরিকল্পনা করে অভিযুক্ত যুবক। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, সোমবার মধ্যরাতে পেট্রোল এবং ডিজেল মিশিয়ে ঘুমন্ত স্ত্রী, শাশুড়ি। শ্বশুর এবং দুই সৎ-ছেলের উপর স্প্রে করে। এরপরই আগুন লাগিয়ে দেয়। এর জেরে ঘটনাস্থলেই পুড়ে মৃত্যু হয় পরমজিতের বাবা সুরজন সিং (৫০), মা যোগিন্দর (৪৭), পরমজিৎ এবং তাঁর দুই ছেলে আর্শদীপ (৮) এবং আনমোলের (৫)।
এই ঘটনার খবর পেয়েই তদন্ত শুরু করে জলন্ধর থানার পুলিশ। দেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদিকে, ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্ত কুলদীপ সিং। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দেশে ক্রমশ বেড়েই চলেছে নারী নির্যাতনের ঘটনা। সামান্য সামান্য কারণে স্ত্রীর উপর অত্যাচার, খুনের ঘটনা প্রায়শই ঘটছে। গার্হস্থ্য হিংসা থেকে শুরু করে ধর্ষণ, খুন, মেয়েদের উপরে সংঘটিত অপরাধ বেড়েই চলেছে। এমনকি সম্প্রতি খাবারে নুন বেশি হওয়ায় স্ত্রীকে খুনের ঘটনাও সামনে এসেছে। আর এই ঘটনার ক্ষেত্রেও সমস্যার সূত্রপাত গার্হস্থ্য হিংসা থেকেই।