‘ভারত বিশ্বকে গণতন্ত্রের প্রকৃত অর্থ শিখিয়েছে’, স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে ভাষণে কী বললেন রাষ্ট্রপতি?
বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রাত পোহালেই স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন দেশের নয়া রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এদিন দেশের নব নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেন, “ভারত একটি স্বাধীন দেশ হিসাবে ৭৫ বছর পূরণ করেছে। ১৪ আগস্ট দিনটি ‘দেশের বিভীষিকা স্মরণ দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে।”
এদিন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু আজ দেশের লিঙ্গ বৈষম্য থেকে শুরু করে নানা বিষয়ে বক্তব্য রেখেছেন। রাস্ত্রপতির কথায়, ‘দেশে লিঙ্গ বৈষম্য কমছে। মেয়েরা অনেক বাধা ভেঙে এগিয়ে যাচ্ছে।’ রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট আমরা ঔপনিবেশিক শাসনের শিকল কেটেছিলাম। কঠোর পরিশ্রম করে হয়েছিলাম ভাগ্যবিধাতা। সেদিন আমরা আমাদের ভাগ্যকে নতুন করে রূপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেই শুভ দিনের ৭৫ বর্ষপূর্তি উদযাপনের সময় আমরা সকল স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। আমরা সবাই যাতে স্বাধীন ভারতে শ্বাস নিতে পারি সেজন্য তাঁরা সর্বস্ব উৎসর্গ করেছিলেন।’
এদিন রাষ্ট্রপতি দেশের মহিলাদের ভোটাধিকার পাওয়া নিয়েও মন্তব্য করেন। দেশের প্রথম আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বহু দেশ স্বাধীনতা পাওয়ার পর নিজেদের অধিকারের জন্য মেয়েদের অনেক অপেক্ষা করতে হয়। ভোটাধিকারের জন্য লড়াই করতে হয়। কিন্তু ভারতে স্বাধীনতার পরই মহিলারা ভোটাধিকার পেয়েছে। ভারত বিশ্বকে গণতন্ত্রের প্রকৃত অর্থ শিখিয়েছে।’
দ্রৌপদী মুর্মু বলেন, “মহাত্মা গান্ধীর ‘ডান্ডি যাত্রা’ স্মৃতিকে সজীব করে তুলে ২০২১ সালের মার্চ মাস থেকে ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ শুরু হয়েছিল। সেই যুগান্তকারী আন্দোলন আমাদের সংগ্রামকে বিশ্বমঞ্চে প্রতিষ্ঠা করেছিল। তাঁকে সম্মান জানিয়েই আমাদের উৎসব শুরু হয়েছিল। এই উৎসব ভারতের জনগণকে উৎসর্গ করা হয়েছে। এই মহাউৎসব এখন ‘হর ঘর তিরাঙ্গা অভিযান’ নিয়ে এগিয়ে চলেছে।”
রাষ্ট্রপতির কথায়, “স্বাধীনতার জন্য বহু বীরের অবদান আমরা ভুলে গিয়েছি। বিশেষ করে আদিবাসী এবং কৃষক সম্প্রদায়ের শহিদদের অবদান আমরা ভুলে গিয়েছি। গত বছর থেকে প্রতি ১৫ নভেম্বরকে ‘উপজাতি গর্ব দিবস’ হিসেবে পালন করার সরকারি সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। আমাদের উপজাতীয় মহানায়করা শুধু স্থানীয় বা আঞ্চলিক নেতা নন, তাঁরা বরেণ্য, সমগ্র জাতির জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। আমাদের দৃঢ় সংকল্প ২০৪৭ সালের মধ্যে আমরা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বপ্নকে পুরোপুরি বাস্তবায়িত করব।”
অন্যদিকে, করোনা কালে দেশের এই মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বিশ্ব একটি নতুন ভারতের উত্থান দেখেছে, বিশেষত কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের পর। আমরা যেভাবে এই মহামারির মোকাবিলা করেছি, তা সর্বত্র প্রশংসিত হয়েছে। আমরা দেশীয়ভাবে তৈরি ভ্যাকসিন দিয়ে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় টিকা অভিযান শুরু করেছি। আমাদের সাফল্য বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের থেকেও বেশি।’
এদিন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তাঁর ভাষণ শেষে সকল দেশবাসীকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে। তিনি বলেন, ‘আমি ভারতের সশস্ত্র বাহিনী, বিদেশে থাকা ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীদের এবং প্রবাসী-ভারতীয়দের অভিনন্দন জানাই। তাঁরা তাঁদের মাতৃভূমিকে গর্বিত করেছেন। সমস্ত দেশবাসীর সুখী জীবনের জন্য আমার শুভেচ্ছা জানাই।’