বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটে গেছে গুজরাটে। রবিবার সন্ধের সময় এই রাজ্যের মোরবি জেলার মচ্ছু নদীতে ভেঙে পড়ে শতাব্দী প্রাচীন কেবল ব্রিজ। এই দুর্ঘটনায় ক্রমশ বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা। এদিকে, বর্তমানে গুজরাট সফরে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জানা গিয়েছে, ১ নভেম্বর দুর্ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী সফরকালের মাঝেই মোরবিতে মচ্ছু নদীর উপরে কেবল সেতু ভেঙে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন এখনও পর্যন্ত ১৪১ জন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাশাপাশি জানা গিয়েছে, অনেকের খোঁজ নেই। দুর্ঘটনার সময় শতাধিক মানুষ ছিলেন ওই ব্রিজে। বেশ কিছু মানুষের নদীতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
সেই ঘটনা প্রসঙ্গে কেভাদিয়ায় সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ভাষণ দেওয়ার সময়ই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘আমার মন মোরবিতে রয়েছে। আমার সহানুভূতি রয়েছে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে। সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছে। তিনি আরও বলেন দুর্যোগে দেশ ঐক্যবদ্ধ।’ মোরবির দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এখানে একতা নগরে আছি কিন্তু মোরবির ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে আমার মন পড়ে আছে। দুর্ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। সরকার সবরকমভাবে নিহতদের পরিবারের পাশে আছে। গত সন্ধ্যা থেকে গুজরাট সরকার ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে গুজরাট সরকারকে সবরকম সাহায্য করা হচ্ছে। এনডিআরএফ ও সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। হাসপাতালে অবিরাম আহতদের চিকিৎসা চলছে।’ এরপরই মঙ্গলবার মোদীর মোরবি যাওয়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়।
অন্যদিকে, দুর্ঘটনার পর পরই গুজরাট সরকার নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারের সদস্যদের ৪ লক্ষ টাকা এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি দুর্ঘটনার পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই দুর্ঘটনার বিষয়ে খোঁজ নেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেলের কাছে। সেই সঙ্গে তাঁকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও ইতিমধ্যেই আর্থিক সাহায্যের ঘোষণাও করেছেন। জানা গিয়েছে, রবিবারের এই দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আর আহতদের চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য করা হবে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে।
এই ঘটনা নিয়ে ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছে গুজরাট সরকার। কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল? তা নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে গুজরাট সরকার। হয়েছে। ৫ সদস্যের একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি ব্রিজটি ভেঙে পরার কারণের তদন্ত করছে। ম্যানেজার-সহ ৯ জনকে আটক করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সেতুটি সারানোর কাজ চলছিল। দিন পাঁচেক আগে নতুন করে খুলে দেওয়া হয়েছিল ওই সেতু। আর তারপরই রবিবার সন্ধ্যায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। মোরবির এই কেবল ব্রিজ বহু বছর আগে নির্মিত হয়েছিল। গুজরাটে এই সেতু বা ব্রিজ অত্যন্ত জনপ্রিয়। সম্প্রতি মেরামতের জন্য বন্ধ ছিল বেশ কিছুদিন ধরে। ওধভজি পটেলের মালিকানাধীন ওরেভা গ্রুপকে মেরামতের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কয়েক কোটি টাকা খরচ করে সেতুটি মেরামত করা হয়েছে। পরে ২৬ অক্টোবর পুনরায় সেতুটি চালু করা হয়। তবে, জানা গিয়েছে, শতাব্দী প্রাচীন সেতুটির সংস্কারের পর পুনরায় চালু করার আগে কোনও সুরক্ষা শংসাপত্রও পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। বিপর্যয়ের নেপথ্যে গাফিলতির প্রমাণও মিলেছে। ভারবহন ক্ষমতার অতিরিক্ত মানুষ উঠেছিলেন। ব্রিজে লাথি মারা হয়েছিল। ঝাঁকানোও হয়েছিল বলেও অভিযোগ।