বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আজ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ভুবনেশ্বরে। তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিবের এর পরের যাবতীয় চিকিৎসা হবে ভুবনেশ্বরের AIIMS-এ এমনটাই জানা গিয়েছিল। এদিন সকালে এসএসকেএম থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে কলকাতা বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। এদিন মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন তাঁর আইনজীবী এবং এসএসকেএম হাসপাতালের এক চিকিৎসক। এছাড়াও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলেন ইডি-র আধিকারিকরাও। কিন্তু ভুবনেশ্বরের AIIMS-এ ভর্তি নেওয়া হল না পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে পার্থর আইনজীবীকে। পাশাপাশি এই রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে ইডির তদন্তকারী অফিসারকেও।
এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক পরীক্ষার পর, তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ভুবনেশ্বর AIIMS। হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, আজই মন্ত্রীকে ছেড়ে দেওয়া হবে। তাঁকে ভর্তি করার প্রয়োজন নেই। ভুবনেশ্বরের AIIMS-এর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কিছু ক্রনিক অসুখে ভুগছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এর জন্য ওষুধ খেয়ে যেতে হবে। এমনিতেই তিনি বর্তমানে বিভিন্ন ওষুধ খাচ্ছেন। ভুবনেশ্বরের AIIMS-এর অধিকর্তা আশুতোষ বিশ্বাস জানিয়েছেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় অসুস্থ ঠিকই। কিন্তু তার জন্য ওষুধ খেতে হবে। ভর্তি থাকার প্রয়োজন নেই।
এদিন ভুবনেশ্বরের AIIMS-এ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ইসিজি, ইকো, ইউএসজি করা হয়েছে। হার্টের সমস্যা ও কিডনির সমস্যা রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন পার্থ। এদিন ভুবনেশ্বরের AIIMS-এর প্রাইভেট ওয়ার্ড ওয়ানের ১০ নম্বর বেডে রাখা হয়েছিল প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে। আজ হাসপাতালে পৌঁছানোর পর প্রথমে তাঁকে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন কার্ডিওলজি, নেফ্রোলজি, এন্ডোক্রিনোলজিস্ট, এবং রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত ৪ জনের মেডিক্যাল টিম।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ওজন, উচ্চতা, রক্তচাপ, পালস রেট পরীক্ষা করার পর, তিনি কোনও অসুখে ভুগছেন কিনা জানতে চান চিকিৎসকরা। পাশাপাশি পার্থ চট্টোপাধ্যায় যেসব শারীরিক সমস্যার কথা জানিয়েছেন, তার জন্য তিনি কোনও ওষুধ খান কিনা, খেলে কী ওষুধ খান, তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল বলেই খবর।
এদিন সকাল ১০টা নাগাদ পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স নামে ভুবনেশ্বর বিমানবন্দরে। সেখান থেকেই অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় AIIMS-এর উদ্দেশে। এয়ার অ্যাম্বুলেন্স থেকে নেমে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে কেমন আছেন, সাংবাদিকদের তরফে জিজ্ঞাসা করা হলে, মুখে কিছু না বলে, ইশারায় বুকে হাত দিয়ে বোঝান যে, ভালো নেই, বুকে ব্যথা রয়েছে। এদিন তাঁকে বেশ বিধ্বস্ত লাগছিল।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইডি শুরু থেকেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এসএসকেএম-এ চিকিৎসার বিরোধিতা করে আসছিল। ইডি- দাবি ছিল, পার্থর চিকিৎসা হোক আলিপুর কমান্ড হাসপাতাল বা জোকা ইএসআই। যদিও মন্ত্রী এবং তাঁর আইনজীবীদের দাবি ছিল, চিকিৎসা হোক এসএসকেএম-এ। সেই কারণেই প্রথমে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে এসএসকেএম-এ ভরতি করা হয়েছিল।
এদিকে, এসএসকেএম-এ ভরতির আগে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছিল জোকার ইএসআই হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসকরাও জানিয়েছিলেন যে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক পরিস্থিতি ততোটাও গুরুতর নয়। সেক্ষেত্রে ইডি-র প্রশ্ন ছিল তাহলে কেন এসএসকেএম-এ ভরতি হতে হল তাঁকে? যদিও ব্যাঙ্কশাল আদালতের নির্দেশেই তিনি এসএসকেএম-এ ভরতি হয়েছিলেন। ইডির অভিযোগ ছিল, প্রভাব খাটিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এসএসকেএম-এ ভরতি হয়েছিলেন। এদিন জোকা ইএসআই এবং এসএসকেএম থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের রিপোর্ট সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন ইডি-র আধিকারিকরা। আর এবার ভুবনেশ্বরের AIIMS-এর চিকিৎসকরাও জানিয়ে দিলেন যে, অসুস্থতা থাকলেও, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক পরিস্থিতি জটিল নয়, হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন নেই।