বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি-র নজর এড়াতে পারছেন না ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। বেআইনি কয়লা খনি খাদান ও সেই সংক্রান্ত বেআইনি আর্থিক লেনদেন মামলায় নাম জড়িয়েছে জেজেএম নেতার। ইডি-র তদন্ত শুরু হতেই চাপে পড়েছে জোট সরকার। সম্প্রতিই মুখ্যমন্ত্রীর সিংহাসন নিয়েও টানাটানি পড়ে গিয়েছিল। সেসময় কোনওমতে আস্থাভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করে গদি বাঁচান সোরেন। ক্ষমতায় টিকে যান।
তবে, ফের ইডির নজরে হেমন্ত। ইডি-র পক্ষ থেকে হেমন্ত সোরেনকে সমন পাঠাতেই আবারও নড়েচড়ে বসেছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। আজই বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিল পেশ করা হতে পারে বলেই জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, ২০১৯ সালের নির্বাচনী প্রচারের সময় দেওয়া দুই প্রতিশ্রুতিই পূরণ করতে চলেছে হেমন্ত সোরেনের সরকার।
শুক্রবার অর্থাৎ আজই ঝাড়খণ্ডের বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশনে দুটি বিল পাশ করা হতে পারে। এই দুটি বিলের মধ্যে একটি বিল হল- স্থানীয় বাসিন্দাদের চিহ্নিতকরণের বিল এবং অপরটি হল পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী বা ওবিসি সম্প্রদায়ের জন্য শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে সংরক্ষণ আরও বাড়ানো। স্থানীয় বাসিন্দা চিহ্নিতকরণ বিলে বলা হয়েছে যে, স্থানীয় বাসিন্দা কারা, তা চিহ্নিতকরণের জন্য ১৯৩২ সালের জমি রেকর্ড ব্যবহার করা হবে। ওই জমির রেকর্ডে যাঁদের নামের উল্লেখ থাকবে, তাঁদের এবং পরবর্তী প্রজন্মকে স্থানীয় বাসিন্দা হিসাবে চিহ্নিতকরণ করা হবে।
আর সংরক্ষণ বাড়ানো বিল অর্থাৎ দ্বিতীয় বিলে বলা হয়েছে যে, পিছিয়ে পড়া শ্রেণির জন্য রাজ্যে সংরক্ষণ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। বর্তমানে সে রাজ্যে সরকারি শিক্ষা ও চাকরিক্ষেত্রে ওবিসিদের জন্য ১৪ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকে। সেই সংরক্ষণের হার বাড়িয়ে ২৭ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এই বিলে। তবে, শুধু ওবিসিই নয়, উপজাতি (শিডিউল ট্রাইব)-র সংরক্ষণের হারও ২৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৮ শতাংশ এবং জনজাতির (শিডিউল কাস্ট) সংরক্ষণের হার ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২ শতাংশ করা হবে।
উল্লেখ্য চলতি সপ্তাহেই জাত-বর্ণ নির্বিশেষে আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণির জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণকে মান্যতা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যদি সংরক্ষণ সংস্কারের বিল পাশ হয়, তাহলে ঝাড়খণ্ডে মোট সংরক্ষিত আসনের হার বেড়ে ৭৭ শতাংশে পৌঁছাবে। দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি সংরক্ষণ হবে ঝাড়খণ্ডেই।
প্রসঙ্গত, দুটি বিলই রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। সাধারণ মানুষ এই দুটি বিলের পক্ষে থাকলেও, বিরোধী দলগুলি এই দুটি বিলের বিরোধিতা করতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। বিরোধী দল বিজেপিকে কোণঠাসা করতে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, রাজ্যপালের সাক্ষর পাওয়া গেলেই কেন্দ্রের কাছেও আবেদন জানানো হবে, যাতে এই নতুন সংরক্ষণ ব্যবস্থাকে আদালতে মামলা করে আটকে দেওয়া না হয়।