বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ করোনার বাড়বাড়ন্তের মাঝেই দেশে ইতিমধ্যেই মাঙ্কিপক্স হানা দিয়েছে। প্রথম আক্রান্তের হদিশ মিলেছিল কেরলে। এবারও দক্ষিণের সেই রাজ্য কেরলেই মিলল দ্বিতীয় মাঙ্কিপক্স আক্রান্তের হদিশ।
গত ১৩ জুলাই দুবাই থেকে কেরলের কান্নুর জেলায় ফেরেন এক ব্যক্তি। আপাতত তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ এই খবর নিশ্চিত করে জানিয়েছেন যে, কান্নুরের সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত বছর ৩১ এর এক ব্যক্তি। জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। পাশাপাশি ওই ব্যক্তি যাঁদের সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাঁদেরও চিহ্নিত করা হচ্ছে। তবে, দেশে আবারও এই রোগে আক্রান্তের সন্ধান মেলায় নতুন করে উদ্বেগ বেড়েছে। এবার মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ রোধে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে কেরল প্রশাসন। এর জন্য ১৪ টি জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, চারটি বিমানবন্দরকেও সজাগ ও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি মাসেই ভারতে প্রথম মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। তিনি ১২ জুলাই সংযুক্ত আরব আমিরশাহী থেকে কেরলে এসছিলেন। দক্ষিণের এই রাজ্যে দেশের মধ্যে প্রথম মাঙ্কিপক্স আক্রান্তের হদিশ মেলার সঙ্গে সঙ্গেই কেন্দ্রের মোদী সরকার সেখানে উচ্চ পর্যায়ের এক প্রতিনিধি দল পাঠায়। দেশে করোনার বাড়বাড়ন্তের মাঝে আতঙ্ক বাড়িয়ে, প্রথম মাঙ্কিপক্সের হদিশ মেলার পরই সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে মাঙ্কিপক্স নিয়ে সতর্ক করে চিঠি পাঠায় কেন্দ্রের মোদী সরকার।
কারও মধ্যে এই রোগের কোনও উপসর্গ দেখা যাচ্ছে কিনা, সেই বিষয়ে নজরদারি বাড়ানোর কথাও বলা হয় কেন্দ্রের তরফে। পাশাপাশি এই রোগের সংক্রমণ রুখতে জারি করা হয় একাধিক নির্দেশিকা। এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আশ্বাস দিয়েছে যে, মাঙ্কিপক্স করোনার মতো ভয়াবহ আকার নেবে না। তবে, এই আশ্বাসে ভর করে সতর্কতা শিথিল করছে না কেন্দ্র। কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে কোনও ব্যক্তির দেহে মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ দেখা দিলে, ২১ দিন তাঁর উপর নজরদারি চালাতে হবে।
উল্লেখ্য, ৭ মে ইংল্যান্ডে প্রথম ধরা পড়ে এই মাঙ্কিপক্স। এরপর তা ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৫৮ সালে প্রথম মাঙ্কি পক্সের ভাইরাসের হদিশ মিলেছিল। এটি আসলে পশুবাহিত রোগ। হু-র পক্ষ চলা মাঙ্কিপক্স নিয়ে গবেষণার নেতৃত্বে থাকা মারিয়া ভ্যান কেরখোভ এর আগে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিকভাবে এই রোগ শনাক্ত করে আক্রান্তদের নিভৃতবাসে পাঠানোটাই সঠিক সিদ্ধান্ত। একজন অন্যজনের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে এলে, বিশেষ করে ত্বকের সংস্পর্শে এলে, তবেই এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে। তাই নিভৃতবাসই এই রোগের ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে পারে।
এই রোগের ক্ষেত্রে, কাঁপুনি দিয়ে জ্বর, মাথা যন্ত্রণা, পেশিতে ব্যথা, হাত-পায়ে ব্যথার মতো কিছু প্রাথমিক উপসর্গ মাঙ্কি পক্সের ক্ষেত্রে দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত হলে শরীরের বিভিন্ন লসিকা গ্রন্থি ফুলে ওঠে। ফোস্কার মতো অসংখ্য ক্ষতচিহ্নের দেখা মেলে শরীরে।