বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ কয়লাকাণ্ডের তদন্তে ইডি’র তলবে রবিবারই দিল্লি গিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আজই তাঁর হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। সেই অনুযায়ী সোমবার, সকাল ১১ টার কিছু আগে দিল্লিতে ইডি’র সদর দফতরে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতির কারণে দিল্লিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের দফতরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, এনিয়ে ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ দ্বিতীয়বার দিল্লিতে ইডি’র দফতরে হাজিরা দিলেন।
এদিন প্রায় সাড়ে ৮ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদের পর দিল্লির ইডি’র সদর দফতর থেকে বেরিয়ে আসেন অভিষেক। বাইরে এসেই তৃণমূলের ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেন, ‘আমি আমার অবস্থানে অনড়। ১০ পয়সার অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমি ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুবরণ করব। আমি মাথানত করব না। আমি অন্য ধাতুতে গড়া। এসব যত করবে আমি লক্ষ্যে অবিচল থাকব। সবাই মেরুদণ্ডহীন হয় না।’ এদিন জিজ্ঞাসাবাদের পর ইডি’র সদর দফতর থেকে বেরিয়ে, সরাসরি বিজেপিকে নিশানা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় হেরে গিয়ে ইডি এবং সিবিআইকে ব্যবহার করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।
উল্লেখ্য, এই একই দাবি রবিবার দিল্লি রওনা হওয়ার আগে বিমানবন্দরে দাঁড়িয়েও করেছিলেন অভিষেক। সেদিন তিনি বলেছিলেন যে, ‘বাংলায় হেরে গায়ে জ্বালা ধরেছে বিজেপির। তাই বারবার ডেকে পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু আমি মাথা নত করব না। আত্মসমর্পন করব না। লড়াই চলবে।’ তিনি এর পাশাপাশি ইডি, সিবিআই-এর মতো কেন্দ্রীয় সংস্থার নিরপেক্ষতা নিয়েও ফের প্রশ্ন তোলেন। তাঁর অভিযোগ, ‘যাঁদের টাকা নিতে দেখা গিয়েছে। যাঁদের বিরুদ্ধে সুদীপ্ত সেন প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন। আজ তাঁরা বিজেপির বড় নেতা। কেউ অসমের মুখ্যমন্ত্রী, কেউ এখানকার বিরোধী দলনেতা। তাঁদের সিবিআই, ইডি ডাকে না। তখন ইডি, সিবিআই-এর চোখে ছানি।’
এদিন কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গে বিজেপির যোগাযোগের প্রসঙ্গ তুলে ধরতে নাম না করে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যকে হাতিয়ার করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বিরোধী দলনেতা বলছেন সব ফোনের কল আমার কাছে রয়েছে। তারপর পেগাসাস বের হচ্ছে। উনি বলছেন ইডি একে ডাকবে। নাম ধরে ধরে বলছেন। পাঁচ জনকে সিবিআই ডাকবে। পাঁচজনকে সিবিআই ডাকছে। এভাবে বাজার গরম করা যায়। কিন্তু গণতন্ত্রে মানুষকে বোকা বানানো সম্ভব নয়। ২০২১-এ হয়নি, ২০২৪-এও হবে না।’
শুধু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই নন, কয়লাকাণ্ডে ইডি’র সদর দফতরে ডেকে পাঠানো হয়েছে রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। মঙ্গলবারই তাঁর হাজিরা দেওয়ার কথা। তবে, অভিষেক জানিয়েছেন, ছেলে ছোট হওয়ায় রুজিরা হাজিরা দেবেন না।
এদিন ইডি’র দফতরে যাওয়ার আগে সুপ্রিম কোর্টে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার দিনের শুরুতেই দিল্লিতে ইডি’র তলবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী রুজিরা। কিন্তু তাঁদের সেই আবেদন খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টে করা আবেদনে তৃণমূল সাংসদ জানিয়েছিলেন যে, তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিল্লিতে নয়, কলকাতায় ইডি’র দফতরে ডাকা হোক তাঁদের। আগেই এই একই আবেদন জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তা খারিজ হওয়ার পরই, ফের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিস পাঠায় ইডি। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই এদিন একই আবেদন করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। কিন্তু এদিন সুপ্রিম কোর্ট সেই আবেদন গ্রহণ করেনি। আবেদন গ্রহণ না করার কারণ হিসেবে, সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, তাদের হাতে অনেক মামলা থাকায়, তারা অভিষেকের মামলাটি গ্রহণ করতে পারছে না।
- TAGS
- ed
- abhishek banerje
- delhi
- bjp