বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ দু-চাকা, চার-চাকার গাড়ি অনেকের বাড়তেই থাকে। এর মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু নেই। তবে, আস্ত হেলিকপ্টার! দিওয়ান হাউজিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লিমিটেড বা ডিএইচএফএল কেলেঙ্কারি মামলার তদন্তে নেমে চক্ষু চড়কগাছ সিবিআই-এর তদন্তকারী আধিকারিকদের। বাড়ির নিচে হ্যাঙ্গারের মতো করে নির্মাণ করা হয়েছে এক বিরাট হলঘর। সেই হলঘরের দেওয়াল জুড়ে রয়েছে পপ সংস্কৃতির পোস্টার। আর সেই ঘরেই রাখা এক আস্ত হেলিকপ্টার। তা আবার যে সে হেলিকপ্টার নয়, অগাস্টা ওয়েস্টল্যান্ড হেলিকপ্টার।
দেশের সবথেকে বড় ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দিওয়ান হাউজিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লিমিটেড বা ডিএইচএফএল কেলেঙ্কারি মামলার তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। সেই মামলার তদন্তে নেমে পুনেতে অবিনাশ ভোসলে নামে তহবিল তছরুপ এবং প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্ত এক নির্মাতার বাড়িতে হানা দিয়েছিলেন সিবিআই-এর আধিকারিকরা। সেখান থেকেই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে একটি অগাস্টা ওয়েস্টল্যান্ড হেলিকপ্টার।
ইউপিএ জামানায় এই হেলিকপ্টার কেনাবেচায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। যাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দেশের রাজনীতি। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও, পাল্টা সুর চড়ায় কংগ্রেসও। কংগ্রেসের বক্তব্য ছিল, বাজপেয়ী জামানাতেই ওই হেলিকপ্টার কেনার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, কংগ্রেস আমলে শুধুমাত্র তার চুক্তি সম্পন্ন হয়েছিল। উল্লেখ্য, ৩৪ হাজার কোটি টাকার ব্যাঙ্ক জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে এই মামলায়। এই জালিয়াতিকে দেশের সব থেকে বড় ব্যাঙ্ক জালিয়াতি বলেই মনে করা হয়।
গত বেশ কিছুদিন ধরেই এই কেলেঙ্কারির থেকে আয় করা টাকা থেকে যে সম্পদ করা হয়েছে, তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআই। গত ২০ জুনই DHFL- এর প্রাক্তন প্রধান কার্যনির্বাহী কর্তা কপিল ওয়াধওয়ান, দীপক ওয়াধাওয়ান এবং অন্যান্য শীর্ষকর্তাদের এই ব্যাঙ্ক জালিয়াতি মামলায় অভিযুক্ত করেছিল সিবিআই। এঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার নেতৃত্বাধীন ১৭টি ব্যাঙ্কের একটি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগ রয়েছে।
জানা গিয়েছে, DHFL- এর জাল অ্যাকাউন্টের বই ব্যবহার করে ৩৪ হাজার ৬১৫ কোটি টাকার ব্যাঙ্ক লোন তোলা হয়েছিল। এরপর একাধিক ভুয়ো সংস্থা এবং বান্দ্রা বুকস’ নামে পরিচিত একটি অন্য অ্যাকাউন্টিং সিস্টেম ব্যবহার করে ভুয়ো সংস্থাগুলিকে তারা ভুয়ো ঋণ দিত। এইভাবেই ডিএইচএফএল-এর তহবিল থেকে চুরি করত তারা।
এই মামলার তদন্তে নেমে, DHFL- এর কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্তদের সম্পত্তি থেকে কোটি কোটি টাকার বিলাসবহুল পণ্যের খোঁজ মিলছে। চলতি মাসের শুরুতেই ওয়াধাওয়ান এবং এই কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত অন্যান্যদের কাছ থেকে ২৫টি বিলাসবহুল ঘড়ি বাজেয়াপ্ত করে সিবিআই। প্রতিটি ঘড়ির দাম ছিল ১ কোটি টাকারও বেশি। এছাড়াও, ৫৬টি চিত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যেগুলির মোট মূল্য ৩৮ কোটি টাকা। পুনেতে যে অবিনাশ ভোসলের বাড়ি থেকে হেলিকপ্টার উদ্ধার করা হয়েছে, সেই অবিনাশই লন্ডনে একটি সম্পত্তি কেনার জন্য ডিএইচএফএল থেকে পাওয়া ৩০০ কোটি টাকা খরচ করেছিলেন। আরও ৪৩ কোটি টাকা এবিআইএল ইনফ্রাস্ট্রাকচার এবং ১৪০ কোটি টাকা মেট্রোপলিস হোটেলকে দেওয়া হয়েছিল। দুটিরই মালিক এই অবিনাশ ভোসলে। এমনটাই জানা গিয়েছে।