বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ৬ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে নোটবন্দির। কেন্দ্র সরকারের এই সিদ্ধান্ত নেহাতই তাত্ত্বিক বিষয় নাকি এই ব্যবহারিক কার্যকারিতাও রয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতেই এবার মোদীর সরকারের ছয় বছর আগের সিদ্ধান্ত খতিয়ে দেখা হবে। এমনটাই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এস এ নাজিরের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘যখন সাংবিধানিক বেঞ্চে কোনও বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, তখন সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়াটা আদালতের কর্তব্য। সরকারের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার ক্ষেত্রে লক্ষণরেখা সম্পর্কে আদালত অবহিত।’ ৯ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।
২০১৬ সালে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রের বিজেপিশাসিত সরকার। দেশজুড়ে রাতারাতি ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের জেরে চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছিলেন সাধারণ মানুষ। লম্বা লাইন পড়েছিল ব্যাঙ্ক এবং এটিএম-এর সামনে। দীর্ঘ সময় ধরে মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল মানুষকে। এমনকি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছিল। অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। প্রশ্নও ওঠে নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত কি আদৌ বৈধ? ৫৮ টি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয় সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু শীর্ষ আদালতের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি টিএস ঠাকুরের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ এই সব মামলাই পাঠিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্টের ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে।
দিন নোটবন্দি সংক্রান্ত মামলার শুনানি হল সুপ্রিম কোর্টের ৫ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে। শুনানিতে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘নোটবাতিল সংক্রান্ত আইন যদি আদালতে চ্যালেঞ্জ করা না হয়, তাহলে বিষয়টি তাত্ত্বিকই থাকবে’।
অবশ্য পাল্টা সওয়াল করেন মামলাকারীদের আইনজীবীরাও। এরপর দুপক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পরে দেশের শীর্ষ আদালত জানায় যে, ‘উভয়পক্ষ সহমত নয়। সেক্ষেত্রে বিষয়টি তাত্ত্বিক বাকি ব্যবহারিক, তা নির্ধারণ করার জন্য নোটবন্দি সিদ্ধান্ত খতিয়ে দেখা প্রয়োজন’। এদিন কেন্দ্র সরকার এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে হলফনামার আকারে নিজেদের মতামত জানানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৭৮ সালে দেশে নোটবন্দি সংক্রান্ত আইনটি কার্যকর হয়। এই আইন অনুযায়ী, বেআইনি আর্থিক লেনদেন রুখতে প্রয়োজনে বেশি মূল্যের নোট বাতিল বলে ঘোষণা করতে পারে কেন্দ্র সরকার। দিল্লিতে ক্ষমতায় আসার দু’বছরের মাথায় সেই পথই অবলম্বন করেছিল হেঁটেছিল মোদী সরকার। কেন্দ্রের বিজেপিশাসিত সরকারের এই নোটবন্দির সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিরোধীরা।