বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ঘরে ঢুকেই পুলিশের চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। ঘরে ঢুকেই পুলিশের নজর পড়ে ডায়েরির কয়েকটি ছেঁড়া পাতায় ইংরেজিতে লেখা- ‘টু ম্যাচ ডেডলি গ্যাস… কার্বন মনোক্সাইড ইনসাইড’। পরের লাইনে লেখা—‘ডু নট লাইট ম্যাচেস অর লাইটার আফটার ওপেনিং দ্য ডোর’। পুরো বিষয়টার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, ঘরে বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস রয়েছে। ঘরে ঢুকে ভুলেও দেশলাই বা লাইটার জ্বালাবেন না। এদিকে, এর ঠিক কয়েক হাত দূরেই নিথর হয়ে পড়েছিলেন বছর পঞ্চাশের এক মহিলা এবং তাঁর দুই মেয়ে।
ঘরের ভিতরটা নিকষ কালো অন্ধকার। জানলা দিয়ে যাতে কোনোভাবেই আলো-বাতাস না ঢুকতে পারে, তার জন্য সব জানলা মোটা প্লাস্টিকে মোড়া। এর ফলে ঘরে অক্সিজেন ঢোকার কোনও উপায়ই ছিল না। একেবারে গোটা ঘরকে নিশ্ছিদ্র অন্ধকূপে পরিণত করা হয়েছিল। ঘরে ভিতরে ছিল তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধ। পুরো ঘরকে গ্যাস চেম্বার বানিয়ে ফেলেছিলেন ওই মা এবং দুই মেয়ে।
অন্যদিকে, পুলিশ যখন ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে, তখনও গ্যাস সিলিন্ডারের নব খোলা। সেখান থেকে গ্যাস তখনও বেরোচ্ছে। সেই জন্য, যাতে কেউ ঘরে ঢুকেই বিপদে না পড়েন, তাই দরজার কাছেই এয়াখা ছিল সুইসাইড নোট। তাতে সতর্ক করে লেখা, ‘খুব সাবধানে ঘরের পর্দা সরাবেন। কারণ গোটা ঘর ভয়ানক গ্যাসে ভর্তি। নিঃশ্বাস নেবেন না।’
এককথায় মৃত্যুর আগে যথেষ্ট ভেবেচিন্তে উদ্ধারকারীরা যাতে বিপদে না পড়েন, তার জন্যই সাবধানবাণী। পুরো ঘটনায় পুলিশ হতবাক। এটা স্পষ্ট যে, খুব ভেবেচিন্তে, ঠাণ্ডা মাথায় নিজেদের জীবন শেষ করার কথা ভেবেছেন ওই পরিবারের সদস্যরা। আর এটা দেখেই রীতিমতো বাকরুদ্ধ পুলিশ আধিকারিকরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত বছর ৫০ এর মহিলার নাম মঞ্জু শ্রিবাস্তবেবগ তাঁর দুই মেয়ে অংশিকা ও অংকু। তাঁরা দিল্লির বসন্ত বিহারের বাসিন্দা। স্থানীয়রা তাঁদের অনেক ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে, পুলিশে খবর দেন। এরপর ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে, দরজা ভেঙে ঢুকতেই তিনজনের নিথর দেহ উদ্ধার হয়।
জানা গিয়েছে, মঞ্জুর স্বামী গত বছরের এপ্রিলে করোনায় মারা যান। এরপর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তাঁরা। এমনটাই দাবি স্থানীয়দের। এরপর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন মঞ্জু দেবী। মানসিক অবসাদেই কি আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন তাঁরা, নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ ছিল? তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।