বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ দেশের করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। ক্রমশ কমছে আক্রান্তের সংখ্যা। প্রতিদিন একটু একটু করে আক্রান্তের সংখ্যা কমার সঙ্গে সঙ্গে কমছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও। পাশাপাশি নিম্নমুখী পজিটিভিটি রেটও। লকডাউন, কড়া বিধিনিষেধ, টিকাকরণে জোরের মধ্যে দিয়ে আবার ধীরে ধীরে সুস্থতার পথে ভারত। যদিও এই মুহূর্তে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজারের নিচেই রয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যাও। এদিকে, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ফের নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে করোনা মহামারী। নতুন শক্তিতে বলীয়ান হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে করোনার একাধিক নয়া প্রজাতি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। তবে, দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় দু’বছর বাদে দেশের সমস্ত করোনা বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। আগামী ৩১ মার্চ থেকে উঠে যাচ্ছে করোনা সংক্রান্ত সব বিধিনিষেধ। দেশের সার্বিক করোনা পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ছে। সোমবারের পর আজ সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনে ফের কমল দেশের করোনা সংক্রমণ। তবে, সামান্য হলেও বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যা।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ফের অনেকটাই কমেছে। এই মুহূর্তে তা কমে দেড় হাজারের অনেকটাই নিচে নেমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ২৫৯ জন। যা গতকালের তুলনায় কম। গতকাল দেশের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ২৭০ জন। উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন পর দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজারের নিচে রয়েছে কয়েকদিন ধরে। সোমবার তা দেড় হাজারের অনেকটাই নিচে নামে। যা নিঃসন্দেহে বড় স্বস্তির খবর। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৫ জন। এই সংখ্যাটাও এই মুহূর্তে স্বস্তিজনক জায়গায় রয়েছে। গতকালের থেকে মৃত্যুর সংখ্যা সামান্য বেশি। গতকাল দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছিল ৩১ জনের। তবে, মৃত্যুর সংখ্যা এখনও চিন্তায় রেখেছে। কারণ প্রায়ই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। দেশে এখনও পর্যন্ত কোভিডে মৃত্যু হয়েছে ৫ লক্ষ ২১ হাজার ৭০ জনের।
এই মুহূর্তে যে সংখ্যাটা সরকারকে সবচেয়ে স্বস্তি দিচ্ছে সেটা হল অ্যাকটিভ কেস। অ্যাকটিভ কেস আগের মতোই নিম্নমুখী। এই নিয়ে পরপর বেশ কিছু সময় ধরেই কমছে দেশের চিকিৎসাধীন করোনা রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টাতেও স্বস্তি দিয়ে কমছে অ্যাকটিভ কেস। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ১৫ হাজার ৩৭৮ জন। আপাতত অ্যাকটিভ কেসের হার কমে দাঁড়িয়েছে ০.০৪ শতাংশে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৭০৫ জন। এখনও পর্যন্ত দেশে করোনাকে পরাস্ত করে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ৪ কোটি ২৪ লক্ষ ৮৫ হাজার ৫৩৪ জন। সুস্থতার হার ৯৮.৭৫ শতাংশ।
করোনার মোকাবিলায় এখনও চলছে টিকাকরণ। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য জানাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত দেশে ১৮৩ কোটি ৫৩ লক্ষ ৯০ হাজার ৪৯৯ জনের করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে। টিকাকরণের পাশাপাশি আগের মতোই চলছে টেস্টিংও। ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের টিকা দেওয়ার কাজ চলছে পাশাপাশি চলছে দেশের প্রবীণ নাগরিকদের বুস্টার ডোজ দেওয়ার কাজও। দেশজুড়ে শুরু হয়েছে ১২-১৪ বছর বয়সিদের টিকাকরণ কর্মসূচি। ষাটোর্ধ্বদের জন্য ‘প্রিকশন ডোজ’ অর্থাৎ বুস্টার ডোজে ছাড়পত্র দিয়েছে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। এতদিন পর্যন্ত ষাটোর্ধ্ব যাঁদের কো-মর্বিডিটি রয়েছে, তাঁদেরই একমাত্র করোনা টিকার ‘বুস্টার’ ডোজ দেওয়া হচ্ছিল। উল্লেখ্য, এরই মধ্যে ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সিদের জন্য জরুরিকালীন ব্যবহারের ক্ষেত্রে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে নোভোভ্যাক্সকে। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের আসায় খুলেছে ছোটদের স্কুলও। করোনার গ্রাফ বলছে ধীরে ধরে সুস্থতার পথেই এগোচ্ছে দেশ।
দেশ থেকে এখনও করোনা সম্পূর্ণ নির্মূল হয়নি। এদিকে, বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে নতুন করে করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত লক্ষ করা গেছে, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য চিন। তাই এই পরিস্থিতিতে আগে থেকেই সতর্ক হচ্ছে দেশ। টিকাকরণের জোর দিয়েই করোনার মোকাবিলা করতে চাইছে দেশ। এদিকে, ICMR অবশ্য বলছে যে, এতে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। অন্য দেশে সংক্রমণ বাড়ছে মানেই যে ভারতেও, নতুন করে সংক্রমণ বাড়বে, তেমন কোনও কারণ নেই। যদিও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে, এখনও ICMR সমস্ত করোনাবিধি মেনে চলার উপরই গুরুত্ব আরোপ করছে। তবে, এপ্রিলের শুরু থেকেই উঠে যাচ্ছে সব করোনা বিধিনিষেধ। যদিও মাস্ক পরা এবং সামাজিক দুরত্ববিধি মানা বাধ্যতামূলকই থাকছে। দেশে এই মুহূর্তে করোনার গ্রাফ নিম্নমুখী।