COVID-19 India Update: গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সামান্য কমল করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা! বাড়ছে অ্যাকটিভ কেস
বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ তবে কি এবার দেশে করোনার চতুর্থ ঢেউ দুয়ারে? নতুন করে করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত তেমনই ইশারা করছে। দেশের করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। ক্রমশ কমতে শুরু করেছিল আক্রান্তের সংখ্যা। লকডাউন, কড়া বিধিনিষেধ, টিকাকরণে জোরের মধ্যে দিয়ে আবার ধীরে ধীরে সুস্থতার পথেই এগোচ্ছিল ভারত। যদিও এই মুহূর্তে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হাজারের অনেক উপরে। অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে নতুন করে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ফের নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে করোনা মহামারী। নতুন শক্তিতে বলীয়ান হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে করোনার একাধিক নয়া প্রজাতি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। তবে, দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় দু’বছর বাদে দেশের সমস্ত করোনা বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। ইতিমধ্যেই উঠে গেছে দেশে করোনা সংক্রান্ত সব বিধিনিষেধ। দেশের সার্বিক করোনা পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
বিগত কিছুদিন, দেশের করোনা গ্রাফ বড় স্বস্তি দিচ্ছিল। ১০০০-এর নিচে নেমেছিল করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এরপর করোনার আরও এক নয়া প্রজাতি XE ভ্যারিয়েন্টের হদিশ মেলার খবরের মাঝেই ফের দেশে বাড়তে শুরু করেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। দেশের করোনা গ্রাফে ওঠানামা অব্যাহত রয়েছে। কয়েকদিন ধরে বাড়ছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। দিল্লিতে যেভাবে দ্রুত বাড়ছে সংক্রমণ তা যথেষ্ট উদ্বেগে রেখেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রককে। দ্রুত পজিটিভিটি রেট বেড়ে চলেছে। যা আশঙ্কাজনক বলেই মানছে বিশেষজ্ঞ মহল। শুধু দিল্লিই নয়, এই তালিকায় আরও কয়েকটি রাজ্য বর্তমান। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা গতকালের থেকে সামান্য কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৫৪১ জন। গতকাল দেশের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৫৯৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩০ জন। গতকাল দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছিল ৪৪ জনের। দেশে এখনও পর্যন্ত কোভিডে মৃত্যু হয়েছে ৫ লক্ষ ২২ হাজার ২২৩ জন।
এতদিন সরকারকে সবচেয়ে স্বস্তি দিচ্ছিল যেটা, সেটা হল অ্যাকটিভ কেস। পরপর বেশ কিছু সময় ধরেই কমছিল দেশের চিকিৎসাধীন করোনা রোগীর সংখ্যা। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরেই তা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ফের বাড়ল অ্যাকটিভ কেস। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ৫২২ জন। গতকাল দেশে মোট সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার ৮৭৩ জন। আপাতত অ্যাকটিভ কেসের হার দাঁড়িয়েছে ০.০৩ শতাংশে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮৬২ জন। এখনও পর্যন্ত দেশে করোনাকে পরাস্ত করে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ৪ কোটি ২৫ লক্ষ ২১ হাজার ৩৪১ জন।
করোনার মোকাবিলায় এখনও চলছে টিকাকরণ। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য জানাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত দেশে ১৮৭ কোটি ৭১ লক্ষ ৯৫ হাজার ৭৮১ জনের করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে। ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের টিকা দেওয়ার কাজ চলছে পাশাপাশি চলছে দেশের প্রবীণ নাগরিকদের বুস্টার ডোজ দেওয়ার কাজও। দেশজুড়ে শুরু হয়েছে ১২-১৪ বছর বয়সিদের টিকাকরণ কর্মসূচি। ষাটোর্ধ্বদের জন্য ‘প্রিকশন ডোজ’ অর্থাৎ বুস্টার ডোজে ছাড়পত্র দিয়েছে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। এদিক, রাজধানী দিল্লি এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় পজিটিভিটি রেট বাড়তে থাকায় নতুন করে উদ্বেগ বাড়ছে। প্রায় দু’বছর বন্ধ থাকার পরে খুলেছে সব স্কুল। কিন্তু এর মধ্যেই অনেক পড়ুয়াই আক্রান্ত হতে শুরু করেছে।
দেশ থেকে এখনও করোনা সম্পূর্ণ নির্মূল হয়নি। এদিকে, বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে নতুন করে করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত লক্ষ করা গেছে, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য চিন। তাই এই পরিস্থিতিতে আগে থেকেই সতর্ক হচ্ছে দেশ। টিকাকরণের জোর দিয়েই করোনার মোকাবিলা করতে চাইছে দেশ। দেশে এই মুহূর্তে করোনার গ্রাফ নিম্নমুখী। এদিকে, জুনে করোনার চতুর্থ ঢেউ আছড়ে পড়ার ইঙ্গিত রয়েছে। দিল্লিতে ক্রমশ বাড়ছে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা। যা নিয়ে উদ্বেগে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এদিকে, ১০ এপ্রিল থেকে দেশে শুরু হয়েছে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে দেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য করোনার প্রিকশন ডোজ বা বুস্টার ডোজ। বেসরকারি হাসপাতাল বা বেসরকারি টিকাকরণ কেন্দ্র থেকে টাকা খরচ করে এই প্রিকশন ডোজ নিতে পারবেন প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক। এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
অন্যদিকে, টিকাকরণের পাশাপাশি আগের মতোই চলছে টেস্টিংও। আগামীতে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই আরও জোরদার করার জন্য টিকাকরণকেই প্রধান হাতিয়ার করতে চাইছে কেন্দ্র। আর তাই এবার ৫ থেকে ১২ বছর বয়সীদের ভ্যাকসিনের জন্য ছাড়পত্র দিল কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার বায়োলজিক্যাল ই-র নির্মিত কর্বেভ্যাক্স টিকাকে ৫ থেকে ১২ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে জরুরি ব্যবহারে ছাড়পত্র দিয়েছে DGCI। কাজেই এবার থেকে শিশুরাও পাবে করোনার টিকা।