বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ আগুনের গ্রাসে দুটি দোকান। দাউদাউ করে জ্বলছে। তার মাঝে একটি বাড়ির বেশিরভাগ অংশও প্রায় আগুনের কবলে। ভিতর থেকে ভেসে আসছে শুধুই আর্তনাদ। সেই সঙ্গে শিশুর কান্নাও। সেই কান্নার আওয়াজ শুনে নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারলেন না এক পুলিশকর্মী। নিজের জীবনের তোয়াক্কা না করে ছুটলেন। আগুনের লেলিহান শিখাকে ভয় না পেয়ে, শিশু এবং মহিলাদের উদ্ধার করলেন আগুনের গ্রাস থেকে। এককথায় সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে থাকা অসহায়দের দেবদূতের মতো উপস্থিত হয়ে উদ্ধার করে তাঁদের নতুন জীবন দান করলেন ওই পুলিশকর্মী। আর এরপরই ভাইরাল হয়েছেন রাজস্থানের ওই পুলিশকর্মী। সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনরা এখন তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। প্রশংসার বন্যায় ভাসছেন ওই মানবদরদী পুলিশকর্মী। সকলেই তাঁকে কুর্নিশ জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, একটি শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে রাজস্থানের কারাউলিতে অশান্তির সৃষ্টি হয়। হিন্দু নববর্ষ নব সম্বৎসর উপলক্ষে বাইক নিয়ে শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল। একটি মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় মিছিল পৌঁছাতেই শুরু হয় সংঘর্ষ। অভিযোগ, সেই সময়ই মিছিল লক্ষ্য করে ঢিল ছোঁড়া হয়। এরপর মিছিলের মধ্যে থেকে পাল্টা ইট ছোঁড়া হয়। এভাবেই কিছুক্ষণের মধ্যেই দু’পক্ষের মধ্যে অশান্তি চরমে ওঠে। এরপরেই স্থানীয় দোকানগুলিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আগুনের লেলিহান শিখা বেশ কয়েকটি বাড়িকেও নিজের গ্রাসে নেয়।
এদিকে, এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ছিলেন পুলিশকর্মী নেত্রেশ শর্মা। তিনি দেখেন, দু’টি দোকানের মাঝে থাকা একটি বাড়িতেও আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। আর সেই বাড়ির ভিতর থেকেই শিশু এবং মহিলাদের কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছে। এই কান্না শুনে তিনি আর নিজেকে স্থির রাখতে পারেননি। ছুটে যান ওই বাড়ির সামনে। যদিও ততক্ষণে বাড়ির দরজা পুরোপুরি আগুনের গ্রাসে। তড়িঘড়ি বাড়ির ভিতরে থাকা শিশুটিকে বুকে জড়িয়ে নেন। সেই সঙ্গে ওই বাড়ির ভেতরে থাকা মহিলাদের বলেন, তাঁকে অনুসরণ করে বেরিয়ে আসতে। এভাবেই প্রাণ বাঁচান ওই অসহায়দের নেত্রেশ।
অন্যদিকে, শিশুকে বুকে জড়িয়ে নেত্রেশের দৌড়ানোর ছবি ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। সকলেই তাঁকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন। ওই পুলিশকর্মীকে বিশেষ পুরস্কারে সম্মানিত করার দাবিও তুলেছেন নেটিজেনদের একাংশ। এতো প্রশংশা নিয়ে অবশ্য বিন্দুমাত্র ভাবিত নন নেত্রেশ। তাঁর কথায়, ‘আমি এখনও জানি না ওই শিশুটি ছেলে নাকি মেয়ে। আমি শুধুই নিজের দায়িত্ব পালন করেছি। এর থেকে বেশি কিছুই নয়।’