1. প্রথম পাতা
  2. কলকাতা
  3. রাজ্য
  4. রাজনীতি
  5. অপরাধ
  6. দেশ
  7. আন্তর্জাতিক
  8. খেলা
  9. কর্ম সন্ধান
  10. বিনোদন
  11. ব্যবসা বাণিজ্য
  12. টেক নিউজ
  13. লাইফস্টাইল
  14. ভাইরাল
  15. আবহাওয়া
  16. রাশিফল

অবশেষে কংগ্রেসের সভাপতির দৌড় থেকে সরে দাঁড়ালেন অশোক গেহলট, সোনিয়ার কাছে চাইলেন ক্ষমা

আত্রেয়ী সেন

সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২, ১০:৫৮ পিএম

অবশেষে কংগ্রেসের সভাপতির দৌড় থেকে সরে দাঁড়ালেন অশোক গেহলট, সোনিয়ার কাছে চাইলেন ক্ষমা

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ কংগ্রেসের সভাপতির পদের নির্বাচন নিয়ে জল্পনার শেষ নেই। সভাপতি নির্বাচন নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে এখনও ডামাডোল অব্যাহত। দলের সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের অন্দরে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি সিদ্ধান্তের কথা রাহুল গান্ধী আগেই ঘোষণা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, যিনি কংগ্রেসের সভাপতি হবেন, তিনি অন্য কোনও পদে থাকতে পারবেন না। এই আবহে কংগ্রেসের সভাপতি পদের দৌড় থেকে সরে দাঁড়ালেন অশোক গেহলট।

ইতিমধ্যেই রাজস্থানে কংগ্রেসে দলের অন্দরে বিদ্রোহের জন্য সোনিয়া গান্ধীর কাছে ক্ষমা চেয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, সভাপতি পদে গান্ধী পরিবারের তরফে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন না, তাও আগেই জানিয়েন সম্প্রতি রাহুল গান্ধী। আর এই নির্বাচনে গান্ধী পরিবারের প্রথম পছন্দ ছিলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। তিনি প্রার্থী হওয়ার কথা ঘোষণাও করেছিলেন। কিন্তু তাঁর অনুগামী বিধায়করা ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করায় রাজস্থানে সরকার পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়।

আসলে তাঁরা অশোক গেহলটের জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সচিন পাইলটকে মেনে নিতে পারেননি। এক ব্যক্তি, এক পদ নীতি অনুযায়ী গেহলটকে সভাপতি পদে বসতে গেলে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হতো। আর তাঁর জায়গায় গান্ধী পরিবারের প্রথম পছন্দ ছিলেন পাইলট। এতেই সমস্যার শুরু। রাজস্থানে গেহলট অনুগামী বিধায়কদের বিদ্রোহের কারণে বেজায় ক্ষুব্ধ গান্ধী পরিবার। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন গেহলট।

সোনিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের পরেই নির্বাচনে লড়াই করার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে লড়বেন না অশোক গেহলট। এর আগে তাঁর প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা এবং রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেওয়ার নিয়ে রাজস্থানে কংগ্রেস দলে তীব্র অন্তর্দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছিল। এরপরই বৃহস্পতিবার বিকেলে অশোক গেহলট সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেন। সোনিয়া গান্ধীর কাছে রাজস্থানের সাম্প্রতিকের ঘটনা নিয়ে দুঃখপ্রকাশও করেন বলেই সূত্রের খবর। ‘

এদিন সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করার পরে গেহলট সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘আমি কোচিতে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে তাঁকে কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচনে লড়তে অনুরোধ করেছি। তিনি রাজি না হওয়ায়, আমি বলেছিলাম আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। কিন্তু, এখন সেই ঘটনার (রাজস্থান রাজনৈতিক সংকট) প্রেক্ষিতে আমি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

এখানেই শেষ নয়, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাঁর থাকাটাও কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধীর সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল বলেই জানিয়েছেন গেহলট। তিনি বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রিত্বের বিষয়ে হাইকমান্ড সিদ্ধান্ত নেবে। আমি মুখ্যমন্ত্রী থাকব কি না তা ম্যাডামই জানাবেন। ইন্দিরাজির সময় থেকে আমি কংগ্রেসের একজন অনুগত সৈনিক। জয়পুরে যা ঘটেছে, তাতে আমি দুঃখ প্রকাশ করেছি। দুই দিন আগে যা ঘটেছিল, তাতে আমরা হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। মনে হয়েছে, আমি মুখ্যমন্ত্রী হতে চাই বলেই এটা ঘটেছে। আমি সনিয়াজির কাছে ক্ষমা চেয়েছি।’ এদিকে, গেহলটের পাশাপাশি এই বিষয়ে কেসি বেনুগোপালও জানিয়েছেন, গেহলট আর মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন কি না, তা দু-এক দিনের মধ্যেই ঠিক করবেন সনিয়া গান্ধী।

অশোক গেহলট অনুগামীরা বিদ্রোহ ঘোষণা করে ইস্তফা দিতেও উদ্যত হন সম্প্রতি। তাঁরা সচিন পাইলটকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মানতে রাজি ছিলেন না। এদিকে, অভিযোগ ছিল, গেহলট নাকি তাঁদের ইন্ধন দিয়েছেন বিদ্রোহে। এতে বেজায় ক্ষুব্ধ শীর্ষ নেতৃত্ব। জল্পনা শুরু হয় যে, মুখ্যমন্ত্রীর পদ খোয়াতে পারেন অশোক গেহলট, পাশাপাশি সভাপতি নির্বাচন থেকেও বাদ পড়বেন। এই বিদ্রোহের কারণে শাস্তি পাবেন গেহলট ঘনিষ্ঠ তিন বিধায়ক। দলের অন্দরে বিদ্রোহের পরিকল্পনা এবং তা সূচনা করায় তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

কংগ্রেস সূত্রের খবর, রাজস্থানের সঙ্কট নিয়ে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে যে পর্যবেক্ষক দল পাঠানো হয়েছিল, তাঁরা সোনিয়া গান্ধীর কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। সেই রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন যে, সভাপতি নির্বাচনে ও মুখ্যমন্ত্রী হওয়া নিয়ে দলের অন্দরে যে বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল, তার জন্য দায়ি নন গেহলট। তিনি সভাপতি নির্বাচিত হলে, মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন সচিন পাইলট। এই জল্পনা থেকেই গেহলট ঘনিষ্ঠ তিন বিধায়ক গোটা ইস্তফা নাটকের রচনা করেছিলেন। তাঁদের কথা মেনে বাকি বিধায়করা ইস্তফা দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, রাজস্থান সরকার নিয়ে অস্থিরতা শুরু হতেই গোটা পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রি সোনিয়া গান্ধী। মঙ্গলবারই তাঁর কাছে রিপোর্ট জমা পড়ে। এই রিপোর্ট দেন দুই পর্যবেক্ষক মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং অজয় মাকেন। তাঁদের সেই রিপোর্টেই রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের পরিবর্তে তাঁরই ঘনিষ্ঠ তিন বিধায়কের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ওই তিন বিধায়ক হলেন, রাজস্থানের নগরোন্নয়ন, আবাসন ও পরিষদীয় মন্ত্রী শান্তি ধারিওয়াল, কংগ্রেস পরিষদীয় দলের চিফ হুইপ মহেশ জোশী এবং রাজ্য পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান ধর্মেন্দ্র পাঠক।

জানা গিয়েছে, সোনিয়া গান্ধীকে দেওয়া রিপোর্টে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে আগামী ১০ দিনের মধ্যে ওই তিন নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও করা হয়েছে। কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতেই দুই পর্যবেক্ষকের সুপারিশ মেনে তাঁদের শো-কজ নোটিস পাঠানো হয়েছে। তাঁদের ১০ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন