বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ গলায় গামছা, আর পরনে পায়জামা-পাঞ্জাবি। প্রধান শিক্ষকের এই বেশভূষা দেখে বেজায় চটলেন ডি এম। এতোটাই রেগে গেলেন যে, প্রধান শিক্ষকের বেতন বন্ধের নির্দেশ দিয়ে দেন জেলাশাসক। এমনই ঘটনা ঘটেছে বিহারের লক্ষ্মীসরাইয়ে।
সম্প্রতি বিহারেরই এক স্কুলের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। বিহারের মতিহারি জেলার এক সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। সেই ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল যে, সাব-ডিভিশনাল অফিসার ওই স্কুল পরিদর্শনে যান। এদিকে, তাঁর দেওয়া একটি সহজ হিন্দি বাক্যকে ইংরাজিতে অনুবাদ করতে গিয়ে রীতিমতো নাজেহাল অবস্থা হয়েছিল প্রধান শিক্ষকের। সে ঘেমেনেয়ে একসার কাণ্ড।
আর এবারও বিহারের এক স্কুলের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তবে, এই ভিডিওর বিষয়বস্তু আলাদা। এই স্কুলে পায়জামা-পাঞ্জাবি পরে আসাতেই জেলাশাসকের ক্ষোভের মুখে পড়তে হল এক প্রধান শিক্ষককে। এই স্কুলের ভিডিও-ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে ইতিমধ্যেই। আর এরপরই বিহারের লক্ষীসরাইয়ের এই ঘটনায় নেটিজেনদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সম্প্রতি নেটদুনিয়ায় ভাইরাল একটি ভিডিও যেখানে দেখা গিয়েছে, স্কুলে কুর্তা পাজামা পরে আসার জন্য জেলাশাসকের রোষের মুখে পড়তে হয় স্কুলের প্রধান শিক্ষককে। সেই সঙ্গে ভাইরাল ভিডিওতে জেলাশাসককে বলতে শোনা গিয়েছে ‘এই পোশাক পরে স্কুলে নয় আপনি ভোটের প্রচারের জন্য যেতে পারেন, মানুষের কাছে এই পোশাক পরে ভোট চাইতে পারেন কিন্তু এমন পোশাক পরে স্কুলে আসা কোন মতেই বরদাস্ত করা হবে না’।
এখানেই শেষ নয়। এর পাশাপাশি জেলাশাসককে ফোনে কোন এক আধিকারিককে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়ার সঙ্গে তাঁর বেতন বন্ধেরও কথাও বলতে শোনা যায়। তবে, জেলাশাসকের এমন আচরণের জন্য তাঁকে নেটিজেনদের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিহারের লক্ষীসরাইয়ের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনের সময় স্কুলের প্রধান শিক্ষককে কুর্তা পায়জামা পরা অবস্থায় দেখেই রেগে যান জেলাশাসক সঞ্জয় কুমার সিং। এতোটাই রেগে যান যে, পরিবেশ- পরিস্থিতির তোয়াক্কা না করেই, তিনি ছাত্রদের সামনে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে কড়া ভাষায় তিরস্কার করেন। এরপরই কাউকে তাঁকে ফোনে বলতে শোনা যায়, ‘আপনার প্রধান শিক্ষক আমার সামনে কুর্তা এবং পায়জামা পরে বসে আছেন। ছাত্রদের পড়ানোর বদলে তিনি নেতাসুলভ আচরণ দেখাচ্ছেন’।
জানা গিয়েছে, ওই প্রধান শিক্ষকের নাম নির্ভয় কুমার সিং। এদিকে, এই ঘটনা প্রসঙ্গে জেলা শিক্ষা আধিকারিক বিমলেশ কুমার চৌধুরী প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘পায়জামা কুর্তা পরা কোন অপরাধ নয়। তবুও ডিএমের নির্দেশে আমরা শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি এবং তাঁকে সতর্ক করেছি। তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়নি, বেশিরভাগ শিক্ষকরা ধুতি কুর্তা বা পায়জামা কুর্তা পরেই স্কুলে আসেন।’
অন্যদিকে, এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হতেই একজন শিক্ষকের সঙ্গে এমন বাজে ব্যবহার করার জন্য জেলাশাসকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নেটিজেনরা। পাশাপাশি অনেকেই জেলাশাসকের ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের কথায়, একজন শিক্ষক স্কুলে পায়জামা-কুর্তা পরে আসতেই পারেন। সেটা তাঁর ব্যক্তিগত অধিকার। তার জন্য এভাবে ছাত্রদের সামনে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে অপমান করে জেলাশাসক ভুল করেছেন। তিনি আসলে এই ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থাকেই অসম্মান করেছেন বলেও অভিযোগ নেটিজেনদের অনেকের।