বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ হাসপাতালে চিকিৎসকের চেম্বার, নাকি বাড়ির শোওয়ার ঘর! দেখে বোঝার উপায় নেই সত্যি। পাটনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপারের অফিস দেখে এমনটাই মনে হয়েছে বিহারের আরজেডি নেতা, উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিহারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালে সারপ্রাইজ ভিজিট করতে গিয়ে এমন দৃশ্যের সাক্ষী থাকলেন তেজস্বী যাদব। তিনি নিজে চোখে দেখলেন, রোগী দেখার পরিবর্তে অফিসেই মশারি খাটিয়ে ঘুমানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই সরকারি হাসপাতালের বেহাল অবস্থা নিয়ে অভিযোগ উঠছিল। এবার সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার রাতে উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব পাটনা মেডিক্যাল হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। সেখানেই তিনি দেখেন যে, হাসপাতালকেই শোওয়ার ঘর বানিয়ে ফেলা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, চলতি সপ্তাহেই রাজ্যের স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বস্তে পারেন তেজস্বী যাদব। তবে, তার আগেই তিনি নিজে মঙ্গলবার হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। সেখানে রোগীদের ওয়ার্ডের বেহাল অবস্থা দেখে, তিনি হাসপাতাল সুপারিন্টেন্ডেন্টের সঙ্গে দেখা করতে যান। সেই সময় দরজার বাইরে থাকা নিরাপত্তারক্ষী তেজস্বী যাদবকে দেখেই চমকে যান। প্রশ্নের মুখে পড়ে, তিনি কার্যত বাধ্য হয়েই সুপারের অফিসের দরজা খুলে দেন। সেখানেই উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিহারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেখতে পান যে, বিছানা পাতা হয়েছে সঙ্গে মশারিও টাঙানো হয়ে গিয়েছে। সুপার ঘুমোতে যাচ্ছিলেন, এদিকে সেই সময় আচমকাই হাজির হন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
নিরাপত্তারক্ষীর মতোই তেজস্বী যাদবকে অফিসে দেখে, স্বাভাবিকভাবেই চমকে যান হাসপাতালের সুপার। জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের বেহাল অবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। হাসপাতালের অপরিচ্ছন্নতা, রোগী পরিষেবা নিয়েও অসন্তুষ্ট তেজস্বী যাদব। মঙ্গলবার হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রবেশ করতেই রোগী ও রোগীর পরিবারের সদস্যরা মন্ত্রীর কাছে হাসপাতালের অব্যবস্থা, অপরিচ্ছন্ন হাসপাতালের শৌচাগার, সঠিক সময়ে চিকিৎসক এবং ওষুধ না মেলার মতো নানা অভিযোগ জানান। অন্যদিকে, মহিলারা জানিয়েছেন, হাসপাতালের শৌচাগার এতই নোংরা যে, তাঁদের বাইরের পে অ্যান্ড ইউজ টয়লেট ব্যবহার করতে হয়। হাসপাতালের ফার্মেসিতেও অধিকাংশ ওষুধই পাওয়া যায় না, তাই বাইরে থেকেই বাধ্য হয়ে ওষুধ কিনতে হয়।
মঙ্গলবার সারপ্রাইজ ভিজিটে তেজস্বী যাদবের সঙ্গে যারা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের করা ভিডিওতে মর্গের করিডরের সামনে একটি মৃতদেহও পড়ে থাকতে দেখা যায়। আবার হাসপাতালের ভিতরে কুকুরও ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়।
গোটা হাসপাতাল ঘুরে তেজস্বী যাদব বলেন, ‘এখানে কেউ দাঁড়াতেও পারবে না’। অভিযোগ, হাসপাতালে সিনিয়র চিকিৎসকদের পাওয়া যায় না, নার্সদেরই যাবতীয় দায়িত্ব পালন করতে হয়। তেজস্বী যাদব আরও বলেছেন, ‘আমরা পটনা মেডিক্যাল কলেজ, গার্ডিনার হাসপাতাল ও গার্ধানিবাগ হাসপাতাল পরিদর্শন করে দেখেছি। বিভিন্ন জেলা থেকে সাধারণ মানুষ আমায় বলেছিল যে এখানে এসে যেন আমি স্বাস্থ্যব্যবস্থা খতিয়ে দেখি।’