বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ জন্মের পর থেকে একজন সন্তানের কাছে তার মা-ই হয়ে ওঠে সবথেকে নিরাপদ আশ্রয় ও একমাত্র ভরসার জায়গা। মায়ের সান্নিধ্যে ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠতে থাকে শিশুটি। যে মায়ের গর্ভ থেকে সন্তানের জন্ম হয় সেই মাও যে সন্তানকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হত্যা করতে পারে এমনটা অসম্ভব বলেই মনে হয়। তবে বাস্তবে এমনটাই ঘটেছে। নিজের চার বছরের কন্যাসন্তানকে চারতলার বারান্দা থেকে রীতিমতো ছুঁড়ে ফেলে দিতে দেখা গিয়েছে মাকে। এই ঘটনার ভিডিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
এই নৃশংস ঘটনার সাক্ষী বেঙ্গালুরু। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত মহিলার নাম সুষমা। ১২ বছর আগে পেশায় ডেন্টিস্ট সুষমার বিয়ে হয়েছিল কিরণের সঙ্গে। তিনি পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। তাঁদের একটি কন্যাসন্তানও জন্ম নেয়। এভাবেই দিন কাটছিল। কিন্তু বছর দুয়েক আগে মেয়ে শ্রুতি মূক ও বধির হয়ে যায়। সেই থেকেই অবসাদ গ্রাস করে সুষমাকে। এমনকি মেয়েকে আর মানুষও করতে চাইছিলেন না তিনি। সেই কারণেই মেয়েকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন সুষমা।
বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুর এসআর নগরের একটি আবাসনের চার তলার ব্যালকনি থেকে চার বছরের খুদেকে ছুড়ে ফেলে দেন তিনি। এরপর নিজেও উঠে দাঁড়ান ব্যালকনির রেলিংয়ে। সম্ভবত নিজেও আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পরিবারের সদস্য এবং প্রতিবেশীদের তৎপরতায় তাঁকে রেলিং থেকে নীচে নামিয়ে আনা হয়। গোটা ঘটনাই ধরা পড়ে সিসিটিভি ক্যামেরায়।
ঘটনার পরই সুষমার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন কিরণ। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই সুষমাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই প্রসঙ্গে সেন্ট্রাল ডিভিশনের ডিসিপি শ্রীনিবাস গোওড়া জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে পৌঁছেই তারা সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। বাচ্চাটি বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন হওয়ায় অভিযুক্ত মহিলা তাকে ব্যালকনি থেকে নীচে ফেলে দেন। তড়িঘড়ি বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অন্যদিকে সুষমাকে গ্রেফতারের পর তাঁর মানসিক অবস্থা খতিয়ে দেখতে মেডিকেল পরীক্ষা করা হবে বলে খবর।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, এর আগেও একবার মেয়েকে খুন করার পরিকল্পনা করেছিলেন সুষমা। শ্রুতিকে রেললাইনে রেখে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু পুরো বিষয়টি কিরণ বাবু জানতে পেরে যাওয়ায় সেই যাত্রায় প্রাণে বেঁচে যায় শিশুকন্যাটি। যদিও সেবার স্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি কিরণ। কিন্তু এইবার আর চরম পরিণতির হাত থেকে মেয়েকে বাঁচাতে পারলেন না তিনি। মায়ের হাতেই ‘খুন’ হতে হল সন্তানকে।