বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ একদিনের সফরে অসমে গিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। লক্ষ্য ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচন। এদিন উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য থেকে বিজেপিকে উৎখাত করার ডাক দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপিকে সরাতে এবার উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য থেকে ১০ টি আসন দরকার। বুধবার অসমে গিয়ে সেকথাই বললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি এও দাবি করলেন যে, ত্রিপুরা এবং মেঘালয়ে সরকার গড়বে তৃণমূল সরকার।
বুধবার একদিনের অসম সফরে গিয়ে এক সভায় অভিষেক কেন্দ্রকে আক্রমণ করে বলেন যে, ‘ডবল ইঞ্জিনের সরকার মানেই ডবল চোর। মোদীকে জেতানোর মাসুল দিতে হচ্ছে পেট্রোলের দামের মাধ্যমে। অসমের মানুষের একটা জাত্যাভিমান রয়েছে। এদেরকে এখান থেকে সরাতে হবে।’
এদিন অভিষেক বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই চান না অসম বিজেপির রিমোট কন্ট্রোলে পরিণত হয়ে থাকুক। অসমের নিজস্ব জাত্যাভিমান রয়েছে। দিল্লি কেন অসমকে চালাবে? বাংলা বা গুজরাট কেন অসমকে চালাবে। অসম নিজে নিজের সম্মান রাখতে জানে।’ একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘চোখে চোখ রেখে কথা হবে। ২০২৪-এ মসনদ উলটাতেই হবে। যাই করে নিক, আমরা ভয় পাই না। মরণপন লড়াই হবে। শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত জান দিয়ে লড়াই করব। রাস্তায় নেমে লড়াই হবে। মার খাব কিন্তু মাথা নোয়াব না। তৃণমূল ঝুঁকবে না। সীমান্তে সেনাদের যেমন মানসিকতা, আমাদেরও তেমন মানসিকতা। তৃণমূল ময়দান ছেড়ে পালিয়ে আসে না।’
আজ অভিষেকের সভায় বেশ কয়েকজন কংগ্রেস নেতা ও একজন বিজেপির মণ্ডল সভাপতি তৃণমূলে যোগ দেন। সুস্মিতা দেবের মতো কংগ্রেসের প্রাক্তন তথা বর্তমান তৃণমূল নেত্রীর উপস্থিতিতে অভিষেক বলেন, রাজ্যে তৃণমূলের বুথ কমিটিকে শক্তিশালী করতে হবে। আজ অসমের কর্মী সভা থেকে অভিষেক বলেন যে, অসম থেকে ১০ টি আসন পেতে হবে। একথা বলে তিনি দলের নেতাদের টার্গেট বেঁধে দিলেন একপ্রকার।
এদিকে, আজকের সভায় বিজেপি বিরোধিতা করতে গিয়ে কংগ্রেসকেও আক্রমণ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্যের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বারবার উঠে এসেছে কংগ্রেসের প্রসঙ্গ। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এদিন বলেন, ‘যতদিন না পর্যন্ত বিজেপির সরকারকে উৎখাত করতে পারব, ময়দান ছেড়ে পালাব না। আপনারা যখন আমায় ডাকবেন পাশে পাবেন। খালি লড়াইয়ের জন্য অসমে পা রাখেনি তৃণমূল কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে কংগ্রেস ছেড়ে এসেছেন। টুইটার-ফেসবুকে লড়াই করি না আমরা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ময়দানে নেমে, মার খেয়ে, তবেই লড়াই হবে। তবেই পেট্রল-ডিজলের দাম কমবে।’
এরপরই তিনি কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে তফাৎ টানেন। অভিষেক বলেন, ‘একবার যখন কোথাও পৌঁছে যায় তৃণমূল কংগ্রেস তখন সেখানেই ঘাঁটি গেড়ে তবেই ছাড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় লড়াই করে না তৃণমূল কংগ্রেস। মাঠে নেমে, ঘাম-রক্ত ঝরিয়ে লড়াই করে। মার খায়, রক্ত ঝরে, তাও মাথা ঝোঁকায় না তৃণমূল। কংগ্রেসের মতো আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না।’
এখানেই শেষ নয়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার প্রসঙ্গ টেনে বলেন যে, ‘ইডি-সিবিআই দিয়ে আমাকে আটকানো যাবে না। আমাকে অন্তত ১০ বার দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে।আমার বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে, জেরা করেছে তবু আমাকে আটকাতে পারেনি। এভাবে কংগ্রেস বা অন্য দলকে আটকানো গেলেও তৃণমূলকে আটকানো যাবে না। ত্রিপুরায় পা দিতেই হামলা হয়েছে আমার উপর। তবু আটকাতে পারেনি। সীমান্তে সেনা জওয়ানদের মতো মানসিকতা নিয়ে আমরা লড়াই করি।’
অন্যদিকে, এদিন অসমের সভা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের বিজেপির সরকারের গোঁড়া সমালোচনা করে বলেন, ‘ধর্মের দোহাই দিয়ে একটা সরকার চলছে। কেউ বলছে হিন্দু বিপদে আছে। কেউ বলছে মুসলমান বিপদে আছে। আমি বলছি ধর্মের চশমাটা খুলে দেখুন, গোটা দেশ বিপদে আছে।’