বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ সাধারণ সরকারি বেতনভুক কর্মচারী। শিক্ষা দফতরে কেরানীর পদে কর্মরত। অথচ তাঁর বাড়িতেই যত্রতত্র রাখা বান্ডিল বান্ডিল টাকা। উদ্ধার হল ৮৫ লক্ষ টাকা। শুধু নগদ টাকাই নয়, ওই সরকারি কেরানীর বাড়ির ঘরের সাজসজ্জায় যে জিনিসগুলো ব্যবহৃত হয়েছে, তারই বাজার দর কমপক্ষে দেড় কোটি টাকা। আরও আছে, এখানেই শেষ নয়। জানা গিয়েছে, ওই কেরানীর কাছে ৪ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। ঘটনাটি অবশ্য এ রাজ্যের নয়। একজন সাধারণ সরকারি কর্মচারীর কাছে এতো টাকা কোথা থেকে এল, এটা জানতেই হিমশিম খাচ্ছেন ইকোনমিক অফেন্স উইংয়ের আধিকারিকেরা।
শুধু এ রাজ্যে নয়, এ রাজ্যের বাইরেও এবার ঘটছে এই ধরনের ঘটনা। এবার মধ্যপ্রদেশের ভোপালে এক সরকারি কর্মচারীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হল লক্ষাধিক টাকা। আয় বহির্ভূত সম্পত্তি নিয়েই তদন্তে নেমেছে মধ্যপ্রদেশ পুলিশের ইকোনমিক অফেন্স উইং।
বুধবার তাঁরা ভোপালের এক সরকারি কেরানীর বাড়িতে অভিযান চালান। ওই কেরানীর নাম হিরো কেশওয়ানি। তিনি চিকিৎসা শিক্ষা বিভাগের আপার ডিভিশন ক্লার্কের পদে কর্মরত। আগেই মধ্যপ্রদেশ পুলিশের ইকোনমিক অফেন্স উইং-এর আধিকারিকদের কাছে খবর ছিল যে, ওই সরকারি কর্মচারীর বাড়িতে বিপুল পরিমাণ টাকা লুকানো আছে। সেই খবরের ভিত্তিতেই তল্লাশি অভিযান চালানো হয় বলেই খবর। এরপর বাড়ি থেকে যা যা উদ্ধার হয়, তাতে চক্ষু চড়কগাছ তদন্তকারী আধিকারিকদের।
জানা গিয়েছে, ৫০ হাজার টাকার বেতনভুক্ত ওই সরকারি কেরানীর বাড়ি থেকে নগদ ৮৫ লক্ষা টাকা উদ্ধার হয়েছে। বাড়িতে রাখা সুটকেস থেকে শুরু করে আলমারি, ঘরের কোণায় কোণায় টাকা লুকানো ছিল। ওই বিপুল পরিমাণ টাকা গুনতে আনা হয় টাকা গোনার মেশিন। দুপুর থেকে শুরু করে মাঝরাত পর্যন্ত চলে টাকা গোনার কাজ। নগদ টাকা ছাড়াও ঘর থেকে একাধিক সম্পত্তির দলিল উদ্ধার হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ৮ কোটি টাকা। অন্যদিকে, ওই কেরানীর বাড়ির অন্দরসজ্জার জন্য যেসব সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে, তার বাজারদর আনুমানিক দেড় কোটি টাকা।
এদিকে, অভিযানের মাঝে ওই ব্যক্তি বাথরুমে গিয়ে ফিনাইল খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হামিদিয়া হাসপাতালে। বর্তমানে তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। তাঁর উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে। অসুস্থতার কারণে ইকোনমিক অফেন্স উইংয়ের আধিকারিকরা এখনও কেশওয়ানিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেননি বলে সূত্রে খবর। তবে, তিনি একটু সুস্থ হলেই জেরা শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে, তদন্তকারী আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, একজন সাধারণ কেরানীর বিলাসবহুল বাড়ি দেখেই প্রথম সন্দেহ তৈরি হয়েছিল। পরে বিভিন্ন সূত্র মারফত খোঁজ নিয়ে, নিশ্চিত হয়েই, গতকাল তাঁরা অভিযান চালান। এরপরই ৮৫ লক্ষ টাকারও বেশি নগদ অর্থ উদ্ধার হয়। এছাড়াও একাধিক স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির কাগজ পাওয়া গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, অধিকাংশ জমি ও সম্পত্তিই তিনি নিজের স্ত্রীর নামে কিনেছিলেন। কেশওয়ানির স্ত্রী গৃহবধূ। এছাড়া একাধিক পরিবারের সদস্যের অ্যাকাউন্টেও লক্ষাধিক টাকা ট্রান্সফারের প্রমাণ মিলেছে। অতি সাধারণ বেতনভুক সরকারি কর্মী কেশওয়ানি। শিক্ষা দফতরে সামান্য কেরানীর পদে চাকরি করেন। কর্ম জীবনের শুরুতে তাঁর বেতন ছিল ৪ হাজার টাকা। এখন মাসে ৫০ হাজার টাকা বেতন পান। স্ত্রী গৃহবধূ। কাজেই শুধুমাত্র একার রোজগারে এত বিপুল সম্পত্তি কীভাবে তিনি করলেন, সেটাই বড় প্রশ্ন তদন্তকারী আধিকারিকদের কাছে। যার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছেন তাঁরা।