ইংরেজি নাম ফায়ার ব্রিগেড হলেও বাঙালিরা দমকল বলতেই বেশি অভ্যস্ত। কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন ফায়ার ব্রিগেডের বাংলা নাম দমকল কেন? আগুন বাহিনীও তো হতে পারতো। তাই না? তাহলে জানুন এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে কয়েকশো বছরের পুরনো এক ইতিহাস। যখন ফোনের ব্যবহার লোকে জানতো না। আজ থেকে প্রায় দেড়শো- দুশো বছর আগে কলকাতা শহরের রাস্তার ধারে আলমারির মতো দেখতে কিছু লাল রঙের লোহার বাক্স রাখা থাকতো।
ভেতরে কাঁচে ঢাকা একটি খোপে থাকতো কলের মতো দেখতে হাতল ঘুরিয়ে দম দেওয়ার একটি যন্ত্র। কোথাও আগুন লাগলে ৭-৮ বার ওই হাতল ঘোরালেই মাটির নিচে পাতা তারের মাধ্যমে সাংকেতিক ভাষায় খবর চলে যেত ফায়ার ব্রিগেডের দপ্তরে। তখন কোন অঞ্চলের পোস্ট থেকে খবর এসেছে সেটা বুঝে ঘোড়ায় টানা গাড়িতে করে জল ভর্তি ট্যাঙ্ক নিয়ে সরকারি লোকজনেরা আগুন নেভাতে যেত। ব্রিটিশ অফিসার, ক্যাপ্টেন বার্নাড অ্যান্সন ওয়েস্টব্রুক এই যন্ত্রটা তৈরী করিয়েছিলেন। এটিই সম্ভবত ভারতে প্রথম ফায়ার অ্যালার্ম।
পৃথিবীর সমস্ত ফায়ার সার্ভিসের দিকে তাকালে প্রথমেই নজরে আসে উজ্জ্বল লাল রং! বাংলাও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু কেন শুধু লাল রং? বলা হয়, প্রথমত এমারজেন্সি সার্ভিসের জন্য। এছাড়াও বলা হয়ে থাকে, আগে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা এই ফায়ার সার্ভিসে কাজ করত। লাল রং সবচেয়ে সস্তার রং ও বিপদের প্রতীক তাই দমকলে এই রং ব্যবহৃত হয়।
১৮৭১ সালে পাঁচটি জায়গায় দমকলের অফিস তৈরি করা হয়। লালবাজার, টালা, পামার’স ব্রিজ, ভবানীপুর, ওয়াটগঞ্জ। এরপর ১৮৯৩ সালে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের কাছে যায় দমকলের দায়িত্ব। জানা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বেশ কয়েকটা দমকল অফিস নষ্ট হয়ে যায়। টিকে ছিল মাত্র দুটি অফিস। কলকাতা ফায়ার ব্রিগেড এবং দার্জিলিং ব্রিগেড। পরে আবার নতুন করে তৈরি হয়।
তখনকার মতো আজকের সমাজেও বিপদের দিনে অন্যতম ভরসা দমকল। আজ দমকল বাহিনী আরও বিস্তৃত হয়েছে। বেড়েছে সংখ্যা। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঘোড়ার গাড়ির জায়গায় এসেছে বড়ো বড়ো গাড়ি! তবে সাইরেনের আওয়াজটা যেনও আজও বদলায়নি! আগুনের হাত থেকে রক্ষা করতে আজও আমজনতার অন্যতম ভরসা দমকল।
- TAGS
- History
- domkol
- fire brigade