বড়ই বিচিত্র দেশ এই ভারত! আমাদের দেশের মতো বৈচিত্র্য বহুল দেশ বোধহয় আর কোথাও নেই! এই দেশে দেব-দেবী, পুজো পার্বণে পরিপূর্ণ। নিয়ম- নিষ্ঠা সংস্কৃতি এই দেশের আধার! এই দেশে এখনও এমন কিছু নিয়ম রীতি রয়েছে যে দেখলে অবাক হতে হয়।মনে করুন কোন মন্দিরে যদি প্রসাদ হিসেবে দেওয়া হয় চিকেন বিরিয়ানি এবং মটন বিরিয়ানি! তাহলে কেমন হয়? জিভে জল এলো? নাকি অবাক হলেন?
আসলে ভারতের বেশিরভাগ মন্দিরে ঠাকুরের পূজা-অর্চনা মূলত হয় দুধ, ফল, মিষ্টি, ফুলে! কিন্তু এইসবের মধ্যেও বৈচিত্র্য আছে। ভারতের কিছু মন্দিরে এমন প্রসাদ দেওয়া হয় যা দেখলে আঁতকে উঠতে হয়। যেমন তামিলনাড়ুর মাদুরাইয়ের মুনিয়ান্ডি মন্দিরে প্রসাদ হিসেবে কী দেওয়া হয় জানেন? সেখানে প্রসাদ হিসেবে দেওয়া হয় মটন বিরিয়ানি। আজ্ঞে এমন প্রসাদ দেখলে চমকে উঠতে হয় বৈকি। এই মন্দিরে পূজিত হন মুনিয়ান্ডি ৷ যাঁর অপর নাম হল মুনীশ্বর ৷ শিবের অপর একটি রূপই এই মন্দিরে পূজিত হয় ৷ আর এই মন্দিরেই নাকি একটি উৎসবে আগত দর্শনার্থীদের প্রসাদ হিসেবে দেওয়া হয় চিকেন ও মটন বিরিয়ানি ৷
জানা যায়, ১৯৭৩ সাল থেকে এই প্রসাদের চল এই মন্দিরে। শোনা যায় সেই সময় মাদুরাইয়ের বারাকামপাত্তি নামের একটি গ্রামের এক ব্যক্তি নিজের হোটেলের ব্যবসা শুরু করেন। সেই ব্যবসা সফল হলে ওই ব্যক্তি মন্দিরের বিগ্রহকে উৎসর্গ করে একটি মহাভোজের আয়োজন করেন। আর সেই মহাভোজের মেনু ছিল মটন বিরিয়ানি। ব্যস্, সেখান থেকেই শুরু।
জানা যায়, ওই উৎসবের পর থেকেই এই মন্দিরকে ঘিরে বিরাট মুনিয়ান্ডি উৎসব পালিত হয়। প্রতি বছর জানুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে তিনদিন ধরে চলে এই উৎসব। আর ওই ব্যবসায়ীর সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই ওই মন্দির সংলগ্ন এলাকায় মটন বিরিয়ানির ব্যবসা শুরু করেন। এবং সকলেই প্রায় সফল হন। আর সেই থেকে ওই ঠাকুর পুজোর পর মটন, চিকেন বিরিয়ানি প্রসাদ খেয়ে ভক্তরা নিজেদের উদরপূর্তি করেন। জানা যায়, ওই মন্দিরে আগত ভক্তদের দান করা প্রচুর পরিমাণে অর্থে এই বিপুল বিরিয়ানি প্রসাদ তৈরি হয় ৷