মা এর নানা রূপ। কখনো তিনি রণচণ্ডী, কখনো তিনি অসুরবিনাসি, কখনো তিনি সিংহবাহিনী আবার কখনো তিনি কন্যা রূপে শান্ত মেয়ে। দেবী দুর্গা প্রতিবছর তার নানা রূপ নিয়ে মর্তে আসেন। মর্তে যেমন রয়েছে থিম পুজোর চল, নানা ক্লাবের পুজো তেমনি রয়েছে গ্রাম বাংলার পুজো, বনেদী বাড়ির পুজো। আর এই নানা জায়গায় নানা রূপে পূজিত হন দেবী দুর্গা।
কোথাও তিনি পূজিত হন হরগৌরী রূপে, আবার কোথাও তিনি আসেন সপরিবারে অর্থাৎ মহাদেব সহ চার সন্তানদের নিয়ে। এরকমই সপরিবারে তিনি হাজির হন কলকাতার এক বনেদী বাড়িতে। উল্লেখ্য বনেদী বাড়ির পুজো গুলির মধ্যে অন্যতম হল কলকাতার ভোলানাথ দত্ত বাড়ির দুর্গা পূজা। এখানে দেবী সপরিবারে অস্ত্র ছাড়ায় আসেন।
এছাড়া এখানে দেবী দুর্গা দশভূজা রূপে নয় দ্বিভূজা রূপেই পূজিত হন। দেবী এক শান্ত মুখ দেখা যায় এখানে। যেন মনে হয় বাড়ির শান্ত মেয়ে স্বামী, ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বাপের বাড়ি এসেছেন। এই বনেদী বাড়িতে মহাদেব কে জামাই রূপে পূজা কড়া হয়ে থাকে।
তবে ভোলানাথ দত্ত বাড়ির দুর্গা পূজায় মা কে অন্নভোগ দেওয়া হয় না। এখানে ফল, মিষ্টি ও পাঁচ রকমের ভাজা দেওয়া হয়ে থাকে। অষ্টমী ও নবমীতে বাড়ির মহিলারা ধুনো পুরিয়ে থাকেন। দু হাতে ও মাথায় গামছা দিয়ে নতুন মালসা বসানো হয়। এবং এই ভাবে এক এক জন তিনটি করে নতুন মালসা করে ধুনো পুরিয়ে থাকেন।
এছাড়া এখানে আরও একটি নিয়ম রয়েছে সেটি হল বেড়া অঞ্জলি। সূর্যাস্তের পর ঠাকুরদালান থেকে প্রতিমাকে বের করে মহিলারা মা কে বরন করে প্রদক্ষিন করতে করতে অঞ্জলি দেন। যা বেড়া অঞ্জলি নামে খ্যাত। এই বনেদী বাড়ির পুজো ১৯০৫ সালে গন্ধ দ্রব্যের ব্যবসায়ী ভোলানাথ দত্ত তাঁর বারাণসীর বাড়িতে প্রথম সূচনা করেন। বর্তমানে এই পুজো হয়ে চলেছে বিডন স্ট্রিট অঞ্চলের বাড়িতে। ভোলানাথ দত্তের মেজো ছেলে এই বাড়িটি কিনেছিলেন বলে জানা গেছে।