বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ চণ্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের স্নানের ভিডিওকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে দেশজুড়ে। পড়ুয়াদের বিক্ষোভে অশান্ত হয়ে উঠল ক্যাম্পাস চত্বর। এই ঘটনায় এবার মুখ খুললেন অভিনেতা সোনু সুদ। ছাত্রীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন অভিনেতা। এর পাশাপাশি এই ঘটনায় সাধারণ মানুষকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার অনুরোধ করেছেন সোনু।
চণ্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলের ৬০ জন ছাত্রীর ভিডিওর মধ্যে ৮ জন ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলেও খবর। এঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেই জানা গিয়েছে। এর জেরে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে উত্তেজনা আরও বাড়ে। যদিও পুলিশ এটিকে অপপ্রচার বলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেও, এ ব্যাপারে সরব হয়েছেন বলি অভিনেতা তথা অসহায়ের মসিহা সোনু সুদ। মেয়েদের হোস্টেলে ৬০ জন ছাত্রীর স্নানের সময় নগ্ন ভিডিও বানানোর অভিযোগ উঠেছে অপর এক ছাত্রীর বিরুদ্ধে। শুধু ভিডিও করেই বিষয়টি শেষ হয়ে যায়নি। অভিযোগ, সহপাঠীদের স্নানের সেই ভিডিও পরিচিত ছাত্রদের কাছেও এমএমএস বানিয়ে ভাইরাল করে দেওয়া হয়। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়াতেও সেইসব ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। এবার চণ্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ভিডিও শেয়ার না করার অনুরোধ জানিয়েছেন অভিনেতা।
রবিবার সোনু টুইট করে বলেছেন, চণ্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে যা হয়েছে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। টুইট করে তিনি বলেছেন, ‘চণ্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে যা হয়েছে, তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এখন আমাদের বোনেদের পাশে দাঁড়ানোর সময়। দায়িত্বশীল সমাজের উদাহরণ তৈরি করতে হবে আমাদের। ভুক্তভোগী ছাত্রীদের নয়, এটা আমাদের পরীক্ষার সময়। সকলে দায়িত্বশীল হয়ে উঠুন।’ নেট মাধ্যমে আর যাতে ওইসব ভিডিও না ছড়ায়, আর যাতে কেউ ওই ভিডিও শেয়ার না করেন, তারও অনুরোধ জানিয়েছেন।
সোনু সুদই শুধু নন, তাঁর পাশাপাশি ওই ভিডিও লিক ও তা ভাইরাল করার নিন্দা করেছেন অভিনেতা রিচা চাড্ডাও। ট্যুইটারে চাড্ডা লিখেছেন, ‘যে ভিডিয়োটি করছে তার শাস্তি হওয়া উচিত। তবে যে ব্যক্তি ওই ভিডিয়ো ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দিয়েছে তাকেও ছাড়া উচিত নয়। তাকে জেলে পচানো উচিত। আমরা কী ধরনের বিকৃত মানসিকতা সম্পন্ন সমাজ হয়ে যাচ্ছি! নিজেদের যত সংস্কারি বলে চিৎকার করি না কেন আমরা ঠিকই আমাদের রূপ প্রকাশ করে ফেলি। ’
ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত ছাত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁকে গ্রেফতার করাও হয়েছে। যদিও মোহালির পুলিশ প্রধান বিবেক সোনি ছাত্রীদের আত্মহত্যার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘হোস্টেলের মেডিক্যাল রেকর্ড অনুযায়ী, কোনও ছাত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা ঘটেনি। বিষয়টি নিয়ে অনেক গুজব ছড়াচ্ছে। দয়া করে গুজবে কান দেবেন না। এক ছাত্রী অন্য সহপাঠীদের ভিডিও তুলে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ আমরা পেয়েছি। ফরেনসিক এভিডেন্স সংগ্রহ করা হয়েছে।’
শনিবার দুপুর থেকেই এই বিষয়টিতে বিক্ষোভে সামিল হন পড়ুয়ারা। গভীর রাত পর্যন্ত চলে বিক্ষোভ আন্দোলন। এরপর গভীর রাতে চণ্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয় ক্য্যাম্পাস ঘেরাও করে এবং ‘উই ফর জাস্টিস’ স্লোগান দিতে থাকে পডুয়ারা। পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আগেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পাশাপাশি অভিযুক্ত ছাত্রীকেও পড়ুয়াদের ক্ষোভ এবং হামলা থেকে বাঁচাতে আলাদা করে এনে কড়া সুরক্ষার মধ্যে রাখা হয়। পরে পুলিশ নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ছাত্রীকে গ্রেফতার করে, হোস্টেলের পড়ুয়াদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুরো বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু পরে পড়ুয়াদের ক্ষোভের মুখে পড়ে, পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
এদিকে, জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত এমবিএ-এর প্রথম বর্ষের ছাত্রী। ওই ছাত্রীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ সি ধারায় আইটি অ্যাক্টে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি সূত্রের খবর, ওই ছাত্রী শিমলার বাসিন্দা। অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে যে, সে ছাত্রীদের স্নানের ভিডিও করে শিমলারই এক পরিচিত যুবককে পাঠাত। এরপর ভিডিওগুলি অনলাইনে প্রাপ্তবয়স্কদের সাইটে আপলোড করা হত। পড়ুয়াদের পক্ষ অভিযোগ করা হয়েছে, কয়েকছাত্রীকে ওই ভিডিও নিয়ে টাকা চেয়ে ব্ল্যাকমেলও করছিল অভিযুক্ত ছাত্রী।