বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ‘থ্রি ইডিয়টস’-এর ফারহানকে মনে আছে নিশ্চয়ই? পর্দার সেই ফারহান আজ হয়ে উঠেছেন পরিচালক। ‘রকেট্রি দ্য নাম্বি এফেক্ট’ (Rocketry: The Nambi Effect)-এর হাত ধরে পরিচালক হিসেবে অভিষেক হল আর মাধবনের। সম্প্রতি কান চলচ্চিত্র উৎসবে (Cannes Film Festival) ছিল সেই ছবির প্রিমিয়ার। আর ছবির প্রিমিয়ারে গিয়েই রীতিমতো বুক ধড়ফড়ানির জোগাড় হয় পরিচালকের।
রকেট্রি দ্য নাম্বি এফেক্ট’ তৈরি করতে গিয়ে নিজের জীবনের যাবতীয় সঞ্চয় বিনিয়োগ করেছেন মাধবন। পাশাপাশি ২০১৭ সাল থেকে কোনও ছবিতেই আর অভিনয় করে ওঠা হয়নি। কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে গিয়ে একথা নিজের মুখে স্বীকার করেন অভিনেতা। তিনি বলেন, “গত চার বছরে একটা টাকাও কামাইনি। তাই ‘রকেট্রি দ্য নাম্বি এফেক্ট’ নিয়ে রীতিমত ভয় করছে।”
২০১৭ সালে ‘বিক্রম মেধা’ ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল মাধবনকে। সিনেমাটির আবার বলিউড রিমেকও তৈরি হচ্ছে। ছবিটিতে রয়েছেন হৃত্বিক রোশন ও সইফ আলি খান। ‘বিক্রম মেধা’র পর বলিউড থেকে আর কোনও ছবিতেই ডাক পড়েনি অভিনেতার। সিনেমায় কাজ না পাওয়ায় বেশ কয়েকটি সিরিজে কাজ করেই সংসার চালাতে হত। কান চলচ্চিত্র উৎসবে গিয়ে এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাধবন নিজেই একথা জানান।
ঠিক কী বলেন তিনি? অভিনেতা জানান, “আমার একটি ছেলে আছে। তার ওপরে গোটা একটি অতিমারী গেল। আর সেই সময়ে একটা পয়সাও কামাতে পারিনি। এমনকি, কোভিড শুরু হওয়ার দু`বছর আগেও আমার অর্থ উপার্জনের রাস্তাও বন্ধ ছিল। কারণ সেই সময় আমি ‘রকেট্রি দ্য নাম্বি এফেক্ট’ সিনেমাটি বানাচ্ছিলাম। ওটিটি প্ল্যাটফর্মে কাজ করে যা আয় হত, তা দিয়েই সংসার চালিয়েছি। সেটা ছাড়া আর অন্য কোনও ছবিও করিনি। আমার শেষ রিলিজ ‘বিক্রম বেধা’। তাই ‘রকেট্রি দ্য নাম্বি এফেক্ট’ ছবিটা নিয়ে রীতিমতো ভয় করছে।”
এই সিনেমার পেছনেই অভিনেতা তাঁর সমস্ত পুঁজি ঢেলে দেন। কিন্তু শুটিং শুরুর কিছুদিনের মধ্যেই সিনেমা থেকে সরে দাঁড়ান খোদ পরিচালক অন্নত মহাদেবন। মাধবন জানান, সেই সময় মানসিক দিক থেকে ভীষণভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। তবে প্রতিটি খারাপ মুহূর্তে তাঁর স্ত্রী সরিতা সবসময় তাঁকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। এই জন্য স্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন মাধবন। অন্নত দায়িত্বভার ত্যাগ করার পর পরিচালকের আসনে বসেন মাধবন নিজেই। যে ব্যক্তিকে নিয়ে সিনেমাটি তৈরি সেই ডা. নাম্বি নারায়ণ এই বিষয়ে মাধবনকে অত্যন্ত উৎসাহ দিয়েছিলেন।
কে এই নাম্বি নারায়ন? ইসরোর প্রাক্তন রকেটবিজ্ঞানী হিসেবে তাঁর নাম বহুল চর্চিত। ১৯৯৪ সালে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেফতার হতে হয়েছিল তাঁকে। দেশের হয়ে কাজ করা সত্ত্বেও গুপ্তচরবৃত্তির মিথ্যা অভিযোগের কালি লাগে নাম্বির গায়ে। প্রায় চার বছর পর সুপ্রিম কোর্ট মুক্তি দেয় তাঁকে। এই বিজ্ঞানীর জীবনের গল্পই বলবে ‘রকেট্রি দ্য নাম্বি এফেক্ট’। নাম্বি নারায়নের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন স্বয়ং আর মাধবন।