বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রবিবার বসেছিল সিনেমার সমাবর্তন ২০২৩, অর্থাৎ ডব্লুবিএফজেএ পুরস্কারের আসর। আর বছরের শেষে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘প্রজাপতি’ যাকে ঘিরে বিস্তর বিতর্ক হয়েছিল, অবশ্য সেই বিতর্কের ইতি ঘটেছে। বিতর্কের ইতি টেনেছিলেন অভিনেতা দেব নিজেই। সেই প্রজাপতিই কিন্তু বছরের শুরুতে বক্স অফিসে ঝড় তুলেছিল। মাত্র একদিনের মধ্যেই মিঠুন-দেব অভিনীত এই ছবি ১ কোটিরও বেশি ব্যবসা করে দেখিয়েছিল। এবার এই ছবির জন্যই WBFJA অ্যাওয়ার্ডে সেরা অভিনেতা (পপুলার) ক্যাটেগরিতে সম্মানিত হলেন মিঠুন চক্রবর্তী। আর মিঠুন চক্রবর্তীর হয়ে এই পুরস্কার গ্রহণ করেন ছবির আরেক অভিনেতা দেব।
সেরা অভিনেতা (পপুলার) ক্যাটেগরিতে এবছর নমিনেশন পেয়েছিলেন ‘কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন’ ছবির জন্য আবির চট্টোপাধ্যায়, ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’ ছবির জন্য প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ‘কিশমিশ‘-এর জন্য দেব, ‘রাবণ’ ছবির জন্য জিৎ। কিন্তু সুপারস্টারদের হেলায় হারিয়েছেন মহাগুরু মিঠুন চক্রবর্তী। যদিও তিনি এদিন উপস্থিত থাকতে পারেননি অনুষ্ঠানে। তাঁর হয়ে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন দেব। পুরস্কার হাতে নিয়ে দেব বলেন, ‘অন্য সব ক্যাটগরিতে কে পুরস্কার পাচ্ছেন, তা নিয়ে সংশয় থাকতে পারে, তবে এই ক্যাটগরিতে নেই’।
উল্লেখ্য, মিঠুন-দেবের ‘প্রজাপতি’ জায়গা পায়নি নন্দনে। সেই নিয়েই বিতর্কের শুরু। ‘প্রজাপতি’ মুক্তির পরেই তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ দাবি করেছিলেন যে, মিঠুন চক্রবর্তীর খারাপ অভিনয়ের জন্য এই ছবি চলছে না। তাঁর এই কথা শুনে দেব উত্তরে বলেছিলেন যে, ‘সিনেমাটা আমার বিষয়, তাই আমার দলের কারোর উচিত নয়, এই বিষয়ে কথা বলার। সিনেমাটা আমার উপর ছেড়ে দিন’। দেব সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন যে, ‘তিনি চান না, এই ছবি নিয়ে কোনও বিতর্ক হোক। কারণ বিতর্ক হলে দর্শক ভয় পেয়ে যাবে।’ সেরা অভিনেতা হিসাবে মিঠুনের এই পুরস্কার এক অর্থে এই ছবিকে ঘিরে সেইসব বিতর্কের সমাপ্তি ঘটাল।এবার দেখে নেওয়া যাক কে কোন বিভাগে কোন ছবির জন্য সেরার সম্মান পেয়েছেন।
এবছর জীবনকৃতি সম্মানে ভূষিত হয়েছেন অভিনেতা ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়। সেরা অভিনেতা (পপুলার) হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তী (প্রজাপতি), সেরা ছবি (পপুলার) বিভাগে পুরস্কার ছিনিয়ে নিয়েছে কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন এবং প্রজাপতি, (যুগ্ম বিজেতা)। সেরা অভিনেতার সম্মান পেয়েছেন ঋত্বিক চক্রবর্তী (অনন্ত) এবং দেব প্রজাপতি চলচ্চিত্রের জন্য। সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন গার্গী রায়চৌধুরী মহানন্দা ছবির জন্য। আর সেরা পরিচালক অনীক দত্ত (অপরাজিত)। এবছর সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার পেয়েছে দুটি চলচ্চিত্র। একটি অপরাজিত এবং অপরটি দোস্তেজী।
২০২৩-এর WBFJA অ্যাওয়ার্ড-এ মোস্ট প্রমিসিং ডিরেক্টর-এর সম্মানে ভূষিত হয়েছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য ‘বল্লভপুরের রূপকথা’ চলচ্চিত্রের জন্য এবং প্রসূন চট্টোপাধ্যায় পেয়েছেন দোস্তেজীর জন্য। অর্থাৎ এই বিভাগেও যুগ্ম বিজেতা। আবার মোস্ট প্রমিসিং অ্যাক্টর (মেল): বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন জীতু কমল (অপরাজিত), মোস্ট প্রমিসিং অ্যাক্টর (ফিমেল) শ্রুতি দাস (এক্স ইক্যুয়াল টু প্রেম) ছবির জন্য। বেস্ট সাপোর্টিং অ্যাক্টর (ফিমেল) বিভাগে পুরস্কৃত হয়েছেন পাওলি দাম ‘ব্যোমকেশ হত্যামঞ্চ’ ছবির জন্য আর বেস্ট সাপোর্টিং অ্যাক্টর (মেল)-এর পুরস্কার পেয়েছেন শ্যামল চক্রবর্তী (বল্লভপুরের রূপকথা)। সেরা অভিনেতা (কমিক) এর জন্য পুরস্কার পেয়েছেন দেবরাজ মিত্র (বল্লভপুরের রূপকথা), খরাজ মুখোপাধ্যায় (প্রজাপতি) এই বিভাগেও যুগ্ম বিজেতা। এদিকে, নেগেটিভ রোল-এর জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন চন্দন সেন ছবি-তীরন্দাজ শবর।
এছাড়াও বেস্ট সাউন্ড ডিজাইনার পেয়েছেন প্রসূন চট্টোপাধ্যায় ও রোহিত সেনগুপ্ত (দোস্তোজী), অনিন্দিত রায় ও অদীপ সিং মাঙ্কি (বল্লভপুরের রূপকথা)। বেস্ট ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন দেবজ্যোতি মিশ্র (অপরাজিত)। বেস্ট এডিটর এর সম্মান পেয়েছেন সংলাপ ভৌমিক (বল্লভপুরের রূপকথা)। বেস্ট সিনেমাটোগ্রাফারের পুরস্কার পেয়েছেন দুজন- ঈষাণ ঘোষ, (ঝিল্লি) এবং তুহিন বিশ্বাস (দোস্তোজী)। অন্যদিকে, বেস্ট আর্ট ডিরেক্টরের পুরস্কার পেয়েছেন আনন্দ আঢ্য অপরাজিত ছবির জন্য।
গানের ক্ষেত্রে বেস্ট প্লেব্যাক সিঙ্গার (মেল)-এর পুরস্কার পেয়েছেন অরিজিৎ সিং (ভালবাসার মরশুম) এবং সপ্তক সানাই দাস (সিন্ড্রেলা মন)। বেস্ট প্লেব্যাক সিঙ্গার (ফিমেল) বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন শ্রেয়া ঘোষাল (ভালবাসার মরশুম)। বেস্ট মিউজিক ডিরেক্টর এর পুরস্কার পেয়েছেন সপ্তক সানাই দাস (এক্স ইক্যুয়াল টু প্রেম) এবং বেস্ট লিরিসিস্ট- এর পুরস্কার পেয়েছেন নীলায়ণ চট্টোপাধ্যায় (কিশমিশ), বারিষ (ভালবাসার মরশুম)। এই বিভাগেও যুগ্ম বিজেতা রয়েছেন।