বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভরতি হলেন কিংবদন্তি চলচ্চিত্র পরিচালক তরুণ মজুমদার। একাধিক শারীরিক সমস্যা রয়েছে তাঁর। এস এস কে এম হাসপাতালের আইসিইউ- তে ভরতি রয়েছে ৯২ বছরের এই পরিচালক। চিকিৎসকরা তাঁকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন বলেই জানা গিয়েছে। পাশাপাশি ইতিমধ্যেই তাঁর করোনা টেস্টও করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে ২০০০ সাল থেকে পরিচালক তরুণ মজুমদার কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। এছাড়াও তাঁর ফুসফুসের সমস্যা ও ডায়াবেটিস রয়েছে। চেস্ট মেডিসিনের চিকিৎসক সোমনাথ কুণ্ড এবং মেডিসিনের চিকিৎসক সৌমিত্র ঘোষের নেতৃত্বে পাঁচজন চিকিৎসকের একটি দল সবসময় তাঁকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন বলেই জানিয়েছেন। শ্বাসকষ্টের সমস্যার জন্য তাঁর করোনা টেস্ট হয়েছে। সেই রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছেন চিকিৎসকেরা। আজই সেই রিপোর্ট আসার কথা বলেও জানা গিয়েছে।
বাংলা চলচ্চিত্রের এই প্রখ্যাত পরিচালকের জন্ম ব্রিটিশশাসিত ভারতে। তাঁর বাবা ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। নাম বীরেন্দ্রনাথ মজুমদার। বিজ্ঞানের ছাত্র হলেও, চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রতি তাঁর ঝোঁক তৈরি হয় একসময়। অপর দুই চলচ্চিত্র পরিচালক শচীন মুখোপাধ্যায় এবং দিলীপ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে জোট বেঁধে ‘যাত্রিক’ নামে চলচ্চিত্র পরিচালনার কাজ শুরু করেন। এই ত্রয়ীর পরিচালনায় প্রথম ১৯৫৯ সালে মুক্তি পায় ‘চাওয়া পাওয়া’ চলচ্চিত্রটি। সেই সুপারহিট চলচ্চিত্রের অভিনয়ে ছিলেন চীরসবুজ জুটি উত্তম-সুচিত্রা। ১৯৬০ সালে বানালেন `স্মৃতি টুকু থাক`। এই যাত্রিকের পরিচালনাতেই ১৯৬২ সালে নির্মিত হয় জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘কাঁচের স্বর্গ’।
তবে, এর কয়েক বছর পরেই ১৯৬৫ সালে ‘যাত্রিক’ থেকে বেরিয়ে আসেন তরুণ মজুমদার। সেই বছরই তিনি আলোর পিপাসা’ এবং ‘একটুকু ভালবাসা’ নামের দু’টি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এরপর থেমে থাকেননি। একের পর এক সুপারহিট বাংলা ছবি দর্শককে উপহার দিয়েছেন। সেইসব চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘বালিকা বধূ’, ‘কুহেলি’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘আপন আমার আপন’, ‘গণদেবতা’, ‘চাঁদের বাড়ি’, ‘ভালবাসা ভালবাসা’, ‘আলো’র মতো সিনেমা।
তাপস পাল, মহুয়া রায়চৌধুরী, অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের মতো বাংলার তাবড় তাবড় অভিনেতা-অভিনেত্রীদের প্রথম অভিনয়ের সুযোগ দিয়েছিলেন তরুণ মজুমদার। তাঁর স্ত্রী সন্ধ্যা রায়ের সঙ্গেও ২০টি ছবি বানিয়েছেন তিনি। করোনাকালে লকডাউনে পরিচালক তরুণ মজুমদার আবারও বই এবং চিত্রনাট্য লেখা শুরু করেছিলেন।
নিজের দীর্ঘ কর্মজীবনে একাধিকবার জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেছেন এহেন প্রখ্যাত ও কিংবদন্তি পরিচালক। ১৯৯০ সালে পেয়েছেন পদ্মশ্রী সম্মানও। তাঁর অসুস্থতার খবরে উদ্বিগ্ন অনুরাগীরা। সকেলেরি বিশ্বাস তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।