বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ একমাত্র মেয়ে ডলকে নিয়ে সম্প্রতি ব্যাংকক ঘুরতে গিয়েছিলেন প্রয়াত অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের সংযুক্তা। সংযুক্তা বরাবরই বলে থাকেন যে, মৃত্যুর পরেও অভিষেক সবসময়ই তাঁদের সঙ্গেই রয়েছেন। তাই যেখানেই যান না কেন সঙ্গে করে নিয়ে যান অভিষেকের ছবি।
এবারেও তার অন্যথা হয়নি। ব্যাংককেও অভিষেকের ছবি সঙ্গে করেই নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হতেই নেটিজেনদের একাংশের কটাক্ষের শিকার হন সংযুক্তা। নেটিজেনদের মধ্যে কেউ কেউ সংযুক্তার এই কাজকে ‘হাস্যকর’ বলে উল্লেখ করেন। কেউ আবার বলেন ‘বাড়াবাড়ি’। এমনকি কেউ কেউ ‘লোক দেখানো’ বলতেও দ্বিধা বোধ করেননি।
বুধবার সেই সব কটাক্ষের মোক্ষম জবাব দিলেন অভিষেক পত্নী সংযুক্তা। অভিষেকের প্রোফাইল থেকেই তিনি লেখেন, “গতকাল আমাদের ভ্রমণ নিয়ে পোস্ট করা একটি আর্টিকেলের প্রতিক্রিয়ায় কিছু মন্তব্য পেয়েছি যে, আমার অভিষেকের ছবি সর্বত্র বহন করা ‘সহানুভূতি’ অর্জনের জন্য এবং এটিকে ‘হাস্যকর’-ও বলা হয়। আমি জানি আমার সমস্ত সমালোচকদের উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবুও যেহেতু এটি অভিকে কেন্দ্র করে - এটিকে সঠিকভাবে সমাধান করা দরকার।”
এখানেই শেষ নয়, সংযুক্তা নেটিজেনদের কটাক্ষের জবাবে বেশ কয়েকটি বিষয় তুলে ধরেন। তিনি লেখেন, ‘কেন আমার সহানুভূতি দরকার? আমি একজন স্বাধীন কর্মজীবী মহিলা এবং অভিষেকের আশীর্বাদে ২৪ মার্চ ২০২২ সাল থেকে এই সংসার চালাচ্ছি। মৃত্যু স্বাভাবিক এবং নিশ্চিত। প্রতিটি পরিবার এই যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যায়। আপনি এটি মোকাবেলা কিভাবে করবেন তা আপনার উপর। আমি মনে করি, অভিষেক আমার এগিয়ে যাওয়ার শক্তি। আমরা কেউ কেউ ফটো ফ্রেম করি এবং প্রণাম জানাই, কিন্তু অভি নিজেই (একটি স্বপ্নে) আমাকে স্পষ্টভাবে বলেছিল যে, এই ছবিটি যেন ফ্রেম না করে আমি নিজের সঙ্গে বহন করি। ওকে যেন আমাদের জার্নির অংশ করে রাখি কারণ ও আমাদের সঙ্গেই আছে।’
প্রয়াত অভিনেতা অভিষেক পত্নী নেটিজেনদের উদ্দেশে আরও লেখেন, “ডলের জন্মদিনের সময় আমি এই ছবিটি বাড়িতে রেখেছিলাম। যখন আমি বাড়ি থেকে প্রায় ৩০ মিনিটের গন্তব্যে পৌঁছলাম তখন আমাকে বাড়ি ফিরতে হয়েছিল। কারণ আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে আমি জন্মদিনের রিটার্ন গিফট আনতে ভুলে গেছি। আসলে অভি আমাকে তাঁকে সাথে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাড়ি ফিরতে বাধ্য করেছে। যেন সে ফিসফিস করে বলল আমার কানে ‘পুতুল এর জন্মদিন আর আমাকে রেখে গেল?’ এই ছবিটি এভাবেই সব অর্থেই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। এর আগে যেখানেই যেতাম সাঁইকে নিয়ে যেতাম। এখন, আমি আমার হৃদয়ে থাকা সত্ত্বেও অভির ছবি সব জায়গায় বহন করি। তবুও, আমি অবশ্যই তাঁকে ‘সর্বত্র’ বহন করি না। এই ছুটিতে, ওঁর শেষ চলচ্চিত্রের ট্রেলার প্রকাশের সময় অর্থাৎ যেখানে আমি অনুভব করি যে তাঁকে অবশ্যই সেই জার্নির অংশ হতে হবে, সেখানেই এই ছবি নিয়ে যাই কারণ, আমি শুধু তাঁর প্রতিনিধিত্ব করছি। আমি কে? আমি তাঁর স্ত্রী হিসেবে অভির প্রতিনিধি এবং সেখানে তাঁর উত্তরাধিকারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় কটাক্ষ নিয়ে সংযুক্তা লেখেন, “সহানুভূতি এবং ‘প্রেম’-এর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত, বেশিরভাগ মানুষ এটি বোঝেন না। সহানুভূতি নিয়ে বাঁচি না। কারো সহানুভূতি নিয়ে বাঁচা উচিতও নয়। আত্মকরুণা সবচেয়ে খারাপ কাজ! এটিকে উৎসাহিত করাও উচিত নয়। যাঁরা এই অনুভূতিগুলোকে হাস্যকর মনে করেন আমি তাঁদের সেন্স অফ হিউমার তাঁদের উপরেই ছেড়ে দিলাম।”