বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ উত্তরপ্রদেশে দাঙ্গা, বিক্ষোভ, খুনের ঘটনা নতুন কিছু নয়। প্রায়শই খুন, ধর্ষণ, নারী নির্যাতনের মতো বিভিন্ন ঘটনার কথা সংবাদ শিরোনামে উঠে আসে। এবার ফের এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী রইল উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ। বাড়ি থেকে উদ্ধার হল একই পরিবারের ৫ সদস্যের মৃতদেহ। পুলিশের ধারণা, প্রত্যেককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে।
কয়েকদিন আগেও উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে গণহত্যার খবর মিলেছিল। এবার ফের এই ভয়াবহ খুনের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। জানা গিয়েছে, এই জঘন্য অপরাধের পর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তদন্ত। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন জেলার এসিপি। রয়েছে একটি বিশেষ টিমও। এছাড়াও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরাও।
সূত্রের খবর, ঘটনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ওই পরিবারের এক প্রৌঢ় দম্পতি, তাঁদের এক মেয়ে, পুত্রবধূ ও এক নাতনির। দু’বছরের ছোট্ট শিশুকন্যাকেও রেহাই দেয়নি দুষ্কৃতীরা। তবে পাঁচ বছরের এক শিশুকন্যা কোনওক্রমে প্রাণে বেঁচে গিয়েছে। ঘটনার জেরে এলাকাবাসীর মধ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। জানা গিয়েছে, নিহতরা হলেন রাজ কুমার যাদব (৫৫), তাঁর স্ত্রী কুসুম (৫০), কন্যা মণীষা (২৫), পুত্রবধূ সবিতা (২৭), নাতনি মীনাক্ষী (২)। ঘটনার একমাত্র সাক্ষী ৫ বছরের অপর এক নাতনি। তড়িঘড়ি জীবিত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয়েছে স্থানীয় হাসপাতালে। পুলিশের ডগ স্কোয়াড দিয়ে তদন্ত চালানো হচ্ছে।
স্থানীয় প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, এদিন সকালে নিহতদের বাড়ি থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখেন তারা। স্বাভাবিকভাবেই সকলের মধ্যে সন্দেহের সঞ্চার হয়। তাদের মধ্যে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা নিহতদের বাড়িতে গেলে এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে অবগত হন। স্থানীয়রাই খবর দেন পুলিশে। ঘটনার জেরে ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে নিয়োগ করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী।
ঘটনার নিন্দা করে উত্তরপ্রদেশের আইন ও শৃঙ্খলার এডিজি প্রশান্ত কুমার বলেছেন, এটি অত্যন্ত গুরুতর অপরাধ। তিনি জানিয়েছেন, ঘটনার বিষয়ে খোঁজখবর চলছে। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (STF)। প্রাথমিক তদন্ত শেষ হলে জানা যাবে এই মর্মান্তিক খুনের ঘটনার পেছনে ঠিক কী কারণে রয়েছে।
অন্যদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে এসএসপি অজয় কুমার জানিয়েছেন, নিহতদের বাড়ির বেডরুমে প্রথম আগুন লাগানো হয়। মৃতদেহগুলিকে উদ্ধার করার পাশাপাশি খুনের তদন্ত করতে ৭ সদস্যের বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। এরপর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে রামনবমীতে ব্যাপক অশান্তির পাশাপাশি দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরীর সংঘর্ষের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে করেছিলেন বৈঠকও। এরপরে রাজ্যে যাতে আর কোনওরকম অশান্তির ঘটনা না ঘটে তা নিশ্চিত করার জন্য নয়া নির্দেশিকা জারি করে যোগী সরকার। জানানো হয়, অনুমতি ছাড়া উত্তরপ্রদেশে কোনও প্রকার ধর্মীয় সভা বা অনুষ্ঠান করা যাবে না। কোনও অশান্তি যাতে মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে পারে তার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে কার্যত ঢেলে সাজানো হয়েছে। এরপরেও এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনার জেরে উত্তরপ্রদেশের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন থেকেই যাচ্ছে। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।