বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে জ্বালানির মূল্য। এই মুহূর্তে তা কমার কোনও লক্ষণই নেই। রবিবার ফের বাড়ল পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম। এই নিয়ে ১৩ দিনে ১১ বার দাম বাড়ল পেট্রোল-ডিজেলের। ১৩ দিনে সব মিলিয়ে পেট্রোলের দাম বেড়েছে মোট ৮ টাকা ৪৩ পয়সা এবং ডিজেলের দাম বেড়েছে ৮ টাকা ৩ পয়সা। কিন্তু এভাবে ক্রমাগত বাড়ার পরেও, নির্বিকার কেন্দ্র সরকার।
রবিবার ফের ৮০ থেকে ৮৪ পয়সা করে বাড়ল পেট্রোল ও ডিজেলের দাম। রবিবার সকাল থেকে এই জ্বালানির এই নয়া দাম কার্যকর হয়েছে। কলকাতা শহরে পেট্রোলের দাম লিটার প্রতি ৮৪ পয়সা বেড়েছে। এই পরিমাণ দাম বেড়ে হয়েছে ১১৩ টাকা ০৩ পয়সা এবং ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ৮০ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৯৭ টাকা ৮২ পয়সা। মুম্বই-সহ দেশের কয়েকটি শহরে শনিবারই ডিজেল ১০০ পার করেছে। যেভাবে রোজ বাড়ছে জ্বালানির দাম, তাতে কলকাতায় ডিজেল সেঞ্চুরি পার করতে আর বেশি দেরি নেই।
এদিকে, দিল্লিতে লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম বেড়ে হয়েছে ১০৩ টাকা ৪১ পয়সা। আর ডিজেলের দাম বেড়ে হয়েছে ৯৩.৬৭ টাকা। মুম্বইতে আরও বেশি দাম। বাণিজ্যনগরীতে লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম ১১৮ টাকা ৮৮ পয়সা এবং ডিজেলের দাম ১০২ টাকা ৬৪ পয়সা। চেন্নাইতে পেট্রোলের দাম লিটার প্রতি ১০৮ টাকা ৯৬ পয়সা ও ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ৯৯ টাকা ৪ পয়সা।
প্রসঙ্গত গত বছর ২ নভেম্বর শেষবার দেশব্যাপী বেড়েছিল জ্বালানীর দাম। ২১ সালের শেষ দিকে আকাশছোঁয়া পেট্রোল-ডিজেলের দামের জের সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছিল। লাগাতার বিক্ষোভ, প্রতিবাদের জেরে কর কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রের সরকার। এরপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দীপাবলির উপহার হিসেবে পেট্রোলে লিটার প্রতি ৫ টাকা এবং ডিজেল ১০ টাকা শুল্ক কমায়। এর ফলে একধাক্কায় পেট্রোল-ডিজেলের দাম অনেকটাই কমে যায়। এরপর প্রধানমন্ত্রীর পথ অনুসরণ করে কয়েকটি বিজেপিশাসিত রাজ্যও কর কমায়। এতে চাপে পড়ে কয়েকটি অবিজেপিশাসিত রাজ্যও করের বোঝা কমাতে বাধ্য হয়। এতে সাধারণ মানুষের কিছুটা সুবিধা হয়। পেট্রোল-ডিজেলের দাম অনেকটা কমে।
কিন্তু চলতি বছরে ৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন মিটতেই ফের বাড়তে শুরু করে পেট্রোল-ডিজেলের দাম। শুধু পেট্রোল ডিজেলেই নয়, বেড়েছে রান্নার গ্যাসেরও দাম। এদিকে, রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়ছে। যার প্রভাব ভারতেও পড়তে শুরু করেছে। এই কারণেই বেড়েছে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম। এই পরিস্থিতিতে তেল সংস্থাগুলি বলছে, অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়ার কারণে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বাড়াতে তারা বাধ্য হচ্ছে। অনুমান করা হচ্ছে যে, আগামী দিনেও এই দাম বাড়ার ধারা জারি থাকবে। এর জেরে সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়তে চলেছে। তবে, ইচ্ছে করলে সরকার কর কমিয়ে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিতে পারে সাধারণ মানুষকে।
জ্বালানীর এই লাগাতার মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবেই এ দেশে জ্বালানীর দাম বেড়েছে। দুই দেশ সংঘর্ষে জড়ালেও বিভিন্ন দেশে তার প্রভাব পড়েছে। এই যুদ্ধের কারণেই জ্বালানীর দাম বেড়েছে। জ্বালানির মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে একাধিক পদক্ষেপ করতে চলেছে সরকার বলেও সম্প্রতি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।