স্টেশন চত্বরে ফেলে দেওয়া আবজর্নাকে কাজে লাগিয়েই বায়ো গ্যাস (Bio Gas) তৈরি করে চমক পূর্ব রেলের মালদহ রেল ডিভিশনের। সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বায়ো গ্যাস তৈরি করে রেলের হেঁসেলে চলছে রান্না। বায়ো গ্যাসের ব্যবহার বাড়ায় হ্রাস পেয়েছে LPG গ্যাসের ব্যবহার। ফলে রান্নার জ্বালানি খরচও অনেকটাই কমেছে রেল কর্তৃপক্ষের।
রেল সূত্রে খবর, মালদহ টাউন স্টেশনের লোকোনপাইলটদের রিটার্নিং রুমের কিচেনে ব্যবহৃত হচ্ছে এই বায়ো গ্যাস। মালদহ টাউন রেলস্টেশন চত্বরে ফেলে দেওয়া বিভিন্ন পচনশীল দ্রব্য সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে ফেলা হচ্ছে। সেখানে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় জমা হচ্ছে সমস্ত পচনশীল দ্রব্য। তা থেকেই তৈরি হচ্ছে বায়ো গ্যাস। একটি নিদিষ্ট ট্যাঙ্কে সেই গ্যাস জমা হচ্ছে। যেখানে সর্বাধিক ৫০০ কেজি বায়ো গ্যাস জমা হতে পারে। এবার সেই গ্যাসই পৌছে যাচ্ছে রেলের হেঁসেলে। হচ্ছে রেল কর্মীদের রান্না।
জানা গিয়েছে, রেলের এই কিচেনে প্রতিদিন প্রায় ৪০০ জনের রান্না হয়। রান্নার জন্য আগে প্রতিমাসে গড়ে ৪০টি করে LPG সিলিন্ডারের প্রয়োজন হত। তবে বায়ো গ্যাসের ব্যবহার চালু হওয়ার পর LPG সিলিন্ডার কম লাগছে। বর্তমানে প্রতি মাসে ১০ থেকে ১২ টি জ্বালানি গ্যাসের সিলিন্ডার বেঁচে যাচ্ছে। ফলে রান্নার জন্য জ্বালানি খরচেও অনেকটাই সাশ্রয় হচ্ছে।
রেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানা যাচ্ছে, গত ১৬ জানুয়ারি থেকে মালদহ রেল ডিভিশনের পক্ষ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। রেল চত্বরের অবজর্না থেকে বায়ো গ্যাস তৈরি হয়ে যাবার পর পড়ে থাকা অবশিষ্ট পচনশীল দ্রব্য গুলি থেকে তৈরি হচ্ছে জৈব সার। সেগুলি রেল পার্ক সহ বিভিন্ন অফিস চত্বরের বিভিন্ন ফুলের বাগানগুলিতে গাছের বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।
শুধু তাই নয়! সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে প্লাস্টিককেও কাজে লাগানো হচ্ছে। মালদহ টাউন রেল স্টেশন চত্বরে জমা হওয়া প্লাস্টিক জাতীয় আবর্জনা ও প্লাস্টিকের বোতলের ডাস্ট তৈরি করে রেলের পক্ষ থেকে বিক্রি করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ২১২ কেজি প্লাস্টিক বেল্ড ও ২০০ কেজি প্লাস্টিক বোতলের গুঁড়ো বিক্রি করা হয়েছে। যা থেকে এখনও পর্যন্ত রেলের আয় হয়েছে প্রায় চার হাজার টাকা। রেল কর্তাদের মতে, এই প্রকল্পে রেলের খুব বেশি মুনাফা না হলেও প্লাস্টিক দূষণ থেকে পরিবেশকে রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে। এই প্রকল্প যদি সফল ভাবে চলে, তবে আগামীতে বায়ো গ্যাসকে আরও ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা যাবে বলে মনে করছেন রেলের কর্তারা। ফলে কমবে পরিবেশ দূষণও।