বাংলা চলচ্চিত্র দুনিয়ার অন্যতম সফল এবং দাপুটে অভিনেতা হলেন রঞ্জিত মল্লিক। যেকোনও বাংলা সিনেমায় তার উপস্থিতি যেন এক আলাদা মাত্রা যোগ। কেমন যেন দর্শকমন আশ্বস্ত হতো রঞ্জিত মল্লিক সিনেমায় থাকা মানেই সেই সিনেমা হিট হবেই। একই সঙ্গে হবে দুর্নীতির দমন।
অভিনেতার কেরিয়ারে অভিনয় করা বেশির ভাগ চরিত্রই কিন্তু ছিল দারুণ রকম প্রতিবাদী। নোংরামি, অবক্ষয়, অসভ্যতার যুগে তার অভিনীত চরিত্রগুলো ছিল যেন সমাজের মুখে সপাটে থাপ্পড়। বারবার বিভিন্ন সিনেমায় প্রতিবাদী রূপে ধরা দিয়েছেন অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক। বেশিরভাগ সিনেমাতেই পুলিশ রূপে তাকে দেখেছে বাঙালি দর্শক। তার অপর নাম বেল্ট ম্যান রঞ্জিত।
আসলে দুষ্কর্ম দেখলেই দোষীকে নিজের বেল্ট খুলে বেধড়ক পিটিয়ে সোজা করেছেন তিনি। তবে জানা যায় বাস্তব জীবনেও নাকি এইরকমই ন্যায় পরায়ণ রঞ্জিত বাবু। অপরাধ দেখলে সেখানেও তিনি মুখ চুপ করে থাকেন না। ভালোভাবেই তার প্রতিবাদ করেন। তা বলে সিনেমার সেটে নাকি সত্যি সত্যিই একবার একজনকে পিটিয়েছিলেন! ইহা কি সত্য? রঞ্জিত মল্লিকের হাতের মার থেকে নাকি বাঁচেননি বাংলা সিনেমার তৎকালীন দুঁদে অভিনেতারাও!
আসলে একবার শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের টক শো, অপুর সংসারে এই বিষয়ে আলোকপাত করেছিলেন জনপ্রিয় বাঙালি অভিনেতা দীপঙ্কর দে। পাশে অবশ্য ছিলেন রঞ্জিত বাবুও। সেই শোতে তিনি জানিয়েছিলেন তিনি নাকি একবার সত্যিকারেই রঞ্জিত মল্লিকের হাত থেকে মার খেয়েছিলেন। আসলে রঞ্জিত মল্লিক চরিত্রের এতটাই গভীরে ঢুকে যেতেন, যে নিজে হয়ে উঠতেন সেই প্রতিবাদী চরিত্র, আর যার জন্য তার সামনে কে রয়েছে সেই বিষয়ে তিনি খুব একটা আলোকপাত করতেন না।
দীপঙ্কর বাবু জানিয়েছিলেন, অ্যাকশনের আগে রঞ্জিত মল্লিক নাকি নিজেই সবাইকে সাবধান করে বলতেন তার থেকে দূরে থাকতে। কিন্তু পরিচালক অ্যাকশন বললেই তিনি নাকি নিজেই ১০ পা এগিয়ে এসে মারতে শুরু করেন। আর অভিনেতার এহেন কথা শুনে হেসে লুটোপুটি খান সেটে উপস্থিত দর্শকরা। স্মৃতি রোমন্থন করে হেসে ফেলেন অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিকও।