আর জি কর খুন ধর্ষণ কাণ্ডে পাঁচ মাস পার হয়ে গেছে। কলকাতা পুলিশ থেকে শুরু করে সিবিআই সঞ্জয় রাইকে ছাড়া আর কাউকেই গ্রেফতার করে উঠতে পারেনি। নারকীয় অত্যাচার করে খুন করা হয় আর জি কর হাসপাতালের এক মহিলা চিকিৎসককে। যদিও শুরুতেই সেই ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে দাগিয়ে দিয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে প্রতিবাদ, বিক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠতেই বদলে যায় এই ঘটনার গতি প্রকৃতি।
ওই সরকারি হাসপাতালে যে বহু অনৈতিক কাজ দীর্ঘদিন ধরে হত তার লম্বা লিস্ট বাইরে আসে। ওই ঘটনার পর আর জি করের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষ থেকে শুরু করে বহু মানুষই যে এই সমস্ত অনৈতিক কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত সেই সমস্ত ঘটনাও ক্রমশই বাইরে আসতে শুরু করে।
বলাই বাহুল্য, এ যে শুধুই ধর্ষণ, খুনের ঘটনা তা নয়। এর পিছনের হয়েছে অনেক বড় চক্রান্ত এমনটাই মনে করা হচ্ছিল। যদিও প্রাথমিক পর্যায়ে এই খুন ও ধর্ষণের ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। ফরেন্সিক রিপোর্ট যেখানে বলছে এই ঘটনা একজনের পক্ষে করা সম্ভব নয় সেখানে শুধুমাত্র সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রাইকে গ্রেফতার করেই ক্ষান্ত হয়ে যায় কলকাতা পুলিশ। অবশ্য সিবিআইও আর কাউকে খুঁজে পাইনি। সঞ্জয় রাইকেই দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত।
হাসপাতলে কর্তব্যরত চিকিৎসককে খুনের ঘটনাও আদালতের দরবারে বিরল থেকে বিরলতম অপরাধ বলে বিবেচিত হয়নি। আর তাই তো ফাঁসি নয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে সঞ্জয় রাইয়ের। তিলোত্তমার মৃত্যু আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিল বাংলায়। ক্ষোভে ফেটে পড়ে বাংলার মানুষ। বহু বছর পরে বাঙালির মধ্যে এমন স্বতঃপ্রণোদিত প্রতিবাদ চোখে পড়েছিল। রাত দখল করেছিল নারীরা।
চলতি মাসের ৯ই ফেব্রুয়ারি জন্মদিন আর জি করের নির্যাতিতার। কাকতালীয়ভাবে আগামী ৯ই ফেব্রুয়ারি সেই নারকীয় ঘটনার ৬ মাস পূর্ণ হবে। এই দিনটিকে মাথায় রেখেই অভয়ার জন্মদিনে মানুষকে অভয়া কাণ্ডে সঠিক বিচারের দাবিতে পথে নামার আর্জি জানালেন নিহত চিকিৎসকের মা-বাবা।
সোশ্যাল মিডিয়া একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করে অভয়ার মায়ের আর্তি ‘আমরাই সেই হতভাগ্য মা-বাবা’। ৯ ফেব্রুয়ারি মেয়ের জন্মদিনে সর্বহারা বাবা-মা সঠিক বিচার না পাওয়ার প্রতিবাদে রাস্তায় নামবেন। তাদের স্পষ্ট কথা, ‘আমরা হতাশ হব না, ভেঙে পড়ব না, বেঁচে থাকব, শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই করব’ সঠিক বিচারের দাবিতে। উল্লেখ্য, তারা চান ওই দিনে সরকারি, বেসরকারি সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ, স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক, কর্মীরা পথে নামুক। তাদের মেয়ের পছন্দ ছিল ফুলগাছ। আর তাই ওই দিনে সকলে যেন একটি করে ফুল গাছ লাগান।